8 places of West Bengal you can visit in Monsoon Season.

বর্ষায় হলিডের প্ল্যান? রইল পশ্চিমবঙ্গের ৮টি পারফেক্ট টুরিস্ট ডেস্টিনেশনের হদিশ

নিউজশর্ট ডেস্কঃ “থাকবো না আর বদ্ধ ঘরে, দেখবো এবার জগতটাকে”, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো সকলেরই ইচ্ছা করে ঘুরে দেখতে গোটা বিশ্বটাকে। ইচ্ছা করে প্রতিদিনের একঘেয়েমি ব্যস্তময় জীবনের বেড়াজাল ছিঁড়ে প্রকৃতির কোলে নিশ্বাস নিতে। সকলেই চান খোলা আকাশের নীচে নিজেকে মুক্তভাবে মেলা ধরতে। কিন্তু খরচের কথা চিন্তা করলেই ইচ্ছে গুলো আর পূরণ হয়না মধ্যবিত্তের। তবে এবার হবে সেই স্বপ্ন পূরণ। কম খরচে ঘুরতে যেতে পারবেন পশ্চিমবঙ্গের ৮টি জায়গায় (8 Places to travel in West Bengal)। সেগুলিই জানাবো আজকের এই প্রতিবেদনে।

দার্জিলিং (Darjeeling): বাঙালির প্রিয় গন্তব্যের মধ্যে অন্যতম দার্জিলিং। পাহাড়ে ঘেরা প্রকৃতি সাথে মেঘের আনাগোনা। উত্তরবঙ্গের এই জায়গা সর্বদাই জমজমাট। বিশেষ করে বর্ষাতেও দার্জিলিং যেন মোহময়ী সুন্দরী। হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে উত্তরবঙ্গগামী কোনো ট্রেনে উঠে নিউ জলপাইগুড়ি নামলেই সেখান থেকে গাড়িতে দার্জিলিং পৌঁছে যাওয়া যায়। তারপর হোটেল কিংবা হোমস্টেতে থাকা আর ঘুরে বেড়ানো সব মিলিয়ে একটা দারুন ছুটি কাটানো যেতে পারে।

Darjeeling

সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান (Sundarbans National Park): ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির কাছে আরও এক পছন্দের জায়গা হল সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান। ম্যানগ্রোভ অরন্যে ঘেরা এই উদ্যানে বাঘের আনাগোনা লেগেই থাকে। তাই রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই ছুটে যান। কলকাতা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হল প্রথমে ধর্মতলায় আসুন, এই ধর্মতলা থেকে সরাসরি বাসন্তীর বাস আছে । বাসন্তীতে নেমে সেখান থেকে লঞ্চে করে ধামাখালী আসুন । এই ধামাখালী সুন্দরবন অঞ্চলের একটি ছোট টাউন । এখান থেকে সুন্দরবনের সব দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ নীল আকাশের মাঝে মেঘের লুকোচুরি! রইল পারফেক্ট হলিডের জন্য উত্তরবঙ্গের অফবিট ডেস্টিনেশনের হদিশ

মিরিক লেক (Mirik Lake): দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত ছবির মত সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র হল মিরিক। মিরিক ভ্রমণপিপাসুদের মানচিত্রে নিজের জায়গা করে নিয়েছে তার আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং যাতায়াতের সুব্যবস্থার জন্য। মিরিক বা সুমেন্দু লেকের  প্রধান আকর্ষণ হল একদিক বাগান এবং অন্যদিক পাইন জঙ্গল দিয়ে ঘেরা পরিবেশ। কলকাতা থেকে বাসে করে প্রথমে  শিলিগুড়ি যেতে হবে।তারপর শিলিগুড়ি থেকে মিরিক পর্যন্ত শেয়ার ট্যাক্সি চালু আছে, যার ভাড়া ৬০ টাকা। এছাড়া ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে ব্যক্তিগত ট্যাক্সি পাওয়া যায়।

Mirik Lake

বকখালি (Bakk Hali): পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার দক্ষিণ প্রান্তের সমুদ্র উপকূলে ঝাউগাছ ঘেরা বকখালির সাগরতট ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বরাবরই আকর্ষণীয়। যে সমস্ত পর্যটক খুব ঘিঞ্জি জনবহুল সমুদ্র সৈকত পছন্দ করেন না, অথচ সাগরের ঢেউয়ের ডাকে সাড়া দিতে চান, তাদের জন্য আদর্শ জায়গা এই বকখালি। যাওয়ার জন্য ট্রেন আর বাস রুট দুটোই রয়েছে। ট্রেনে যেতে হলে শিয়ালদা স্টেশন থেকে দক্ষিণ দিকে নামখানা লোকাল ধরতে হবে। নামখানা নেমে মেন রোডে গিয়ে বাস বা অটো ধরে নিন।  বাসের তুলনায় অটোর খরচ বেশি। যেতে সময় লাগবে কমবেশি ৩০ মিনিট। গোটা রাস্তা বাসে যেতে হলে ধর্মতলা যেতে হবে প্রথমেই। সেখান থেকেই পাবেন গন্তব্যে যাওয়ার বাস। চারচাকা গাড়িতে যেতে হলে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে যেতে হবে। কুলপি, কাকদ্বীপ হয়ে সোজা বকখালি। কলকাতা থেকে কমবেশি ১২০ থেকে ১৪০ কিমি পথ।

লাভা লোলেগাঁও (Lava and Loleygaon) : লাভা লোলেগাঁও একটি গন্তব্য হিসাবে উত্তরবঙ্গের পর্যটকদের কাছে পছন্দের স্থল হয়ে উঠেছে। লাভা হল একটি  ছোট্ট গ্রাম যা পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলায় অবস্থিত। এই ঘুমন্ত এবং শান্ত গ্রামটি ভুটানের বাণিজ্য রুটে পড়ে এবং পাইন বন এবং শঙ্কুযুক্ত গাছ দিয়ে শোভিত।লাভা লোলেগাঁও পাহাড়ের ঠান্ডা কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘে ঘেরা স্বর্গের এক টুকরোর মত মনে হয়। কলকাতা থেকে ট্রেন বা বাসে করে শিলিগুড়ি। তারপর ওখান থেকে গাড়ি করে কালিম্পং-এর লাভা লোলেগাঁও যাওয়া যায়।

Lava Lolegaon

মাইথন (Maithan): মাইথন বাঁধটি ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ধনবাদ থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে মাইথনে অবস্থিত। এই বাঁধটি বিশেষভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল এবং ৬০০০০ কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক বিদ্যুত্ উত্পাদন করে। বাঁধটি বড়াকার নদীর উপর নির্মিত।মাইথন যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে আসানসোল বা কুমারডুবি (KMME) যাওয়ার ট্রেন ধরুন । মাইথন আসানসোল থেকে 30 কিলোমিটার দূরে, স্থানীয় অটোতে প্রায় ₹300-₹400 চার্জ হবে। কুমারডুবি থেকে মাইথন মাত্র 9 কিমি, স্থানীয় অটো চার্জ ₹100। এছাড়াও আপনি কলকাতা থেকে বরাকর (মইথন থেকে 16 কিমি) যেতে পারেন।

maithon

ঝাড়গ্রাম (Jhargram): ঝাড়গ্রাম জেলা হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেদিনীপুর বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। এটি বনপাহাড়ির বনভূমির সৌন্দর্য এবং বেলপাহাড়ী পাহাড়ের জন্য বিখ্যাত। কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ট্রেনে 154 কিমি। হাওড়া/টাটানগর থেকে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে পৌঁছানোর জন্য এক্সপ্রেস/লোকাল ট্রেন ব্যবহার করুন। একটি ট্রেন কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রাম পৌঁছতে সর্বনিম্ন সময় নেয় 2 ঘন্টা 24 মিনিটের।

বক্রেশ্বর (Bakreswar): পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বর শক্তিপীঠ বীরভূম জেলার পাপহরা নদীর তীরে অবস্থিত।এটি কলকাতা থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে । আপনি সরাসরি সড়কপথে সেখানে পৌঁছাতে পারেন। অথবা আপনি ট্রেনে বোলপুর পৌঁছাতে পারেন এবং তারপর জামবনি বাস স্ট্যান্ড থেকে আপনি বাস পেতে পারেন যা আপনাকে বক্রেশ্বরে নিয়ে যাবে। বক্রেশ্বরগামী বাসগুলি সকাল 5:10 টা থেকে 03:10 টা পর্যন্ত প্রতি আধ ঘন্টা পর পর জাম্বনি বাস স্ট্যান্ড ছেড়ে যায়। এছাড়াও আপনি ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারে চড়ে দুবরাজপুর পৌঁছাতে পারেন। সেখান থেকে বাস বা গাড়ি নিয়ে বক্রেশ্বর পৌঁছানো যায়।

Avatar

Koushik Dutta

X