প্রাচীনতম কচ্ছপ,Oldest Turtle

Moumita

বিশ্বের সবথেকে বয়স্ক কচ্ছপ, গত ১৯০ বছর ধরে বহু ঘটনার সাক্ষী এই জনাথন

জন্ম ১৮৩২ সালে, প্রায় দু শতাব্দীর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন তিনি। নাম তার জনাথন, তিনিই বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক বাসিন্দা। যুদ্ধ বিগ্রহ, রোগ বালাইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিব্যি জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। রয়েছেন বেশ খোশমেজাজেই। আজ আমরা এমন একজনের কথা বলতে যাচ্ছি তার বর্তমান বয়স খুব বেশি না হলেও ঐ ১৯০’এর মতো।

   

বলা হয় একজন মানুষের গড় আয়ু সর্বোচ্চ ১০০ বছর। যদিও কিছু মানুষ এর থেকেও বেশি বছর বাঁচে। তবে বয়সের নিরিখে পশুপাখির প্রত্যেকের হিসেব আলাদা। কিছু প্রাণী কয়েক বছর বাঁচে তো আবার কিছু কয়েক ঘণ্টায় মারা যায়। এরমধ্যে জলজ প্রাণীদের জীবনকাল সবচেয়ে বেশি। সাধারণত কচ্ছপের গড় আয়ু হয় একটু বেশিই।, কচ্ছপ গড়ে প্রায় ৮০- ১৫০ বছর বাঁচতে পারে‌‌।

আজ আমরা আপনাকে এমন একটি কচ্ছপ সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যা প্রায় ১৯০ বছর ধরে এই পৃথিবীতে বিদ্যমান। এযাবৎ ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনার সাক্ষী বলা চলে তাকে‌। ১৯০ বছর বয়সী এই কচ্ছপটির নাম জোনাথন। এবং সম্প্রতি টুই মালিলা নামের এক কচ্ছপের কাছ থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক কচ্ছপের খেতাব ছিনিয়ে নিয়েছে জোনাথন। প্রসঙ্গত টুই মালিলা বেঁচে ছিলো ১৮৮ বছর। ১৯৬৫ সালে ঐ কচ্ছপটি মারা যাওয়ার পর এই উপাধি নিজের নামে করে নিয়েছে জোনাথন।

সম্প্রতি ২০২২ সালে জনাথনের ১৯০ তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়।‌ অনুমান করা হয় ১৮৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন জোনাথন। প্রশাসনের কাছেও এই সংক্রান্ত কোনও সঠিক নথী মজুত নেই। ১৮৮২ সালের আগে সেশেলে থাকতো জোনাথন। এরপর তাকে তরুণ অবস্থায় আনা হয় দক্ষিণ আটলান্টিক দ্বীপের সেন্ট হেলেনায়। গবেষণায় জানা যায় একটি কচ্ছপ তার ৫০ বছর পূর্ণ হলে তরুণ হয়। সেই হিসেবে সেইসময় তার বয়স ছিলো ৫০ বছর।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৎকালীন গভর্নর হাউসে জায়গা হয়েছিল তার। সেখানে আগে থেকেই ছিল অন্য তিন স্বগোত্রীয়। ডেভিড, এম্মা আর ফ্রেড। ১৯৩২ সালে সেন্ট হেলেনার গভর্নর স্পেন্সার ডেভিস কচ্ছপটির নাম দিয়েছিলেন জোনাথন। জোনাথনের বেশির ভাগ সময় কাটত হেলেনার গভর্নরের বাড়িতে। গভর্নর হাউসের প্ল্যান্টেশন হাউসের বাগানে থাকতো কচ্ছপটি। তাকে দেখতে রিতিমত ভিড় জমে যেতো।

এছাড়াও স্থানীয়দের মুখে শুনতে পাওয়া যায় যে জোনাথন এবং এমা একে অপরের সঙ্গে প্রেম করে। অবশ্য মাঝে মাঝে সে ফ্রেডের সঙ্গেও খেলা করে। প্রসঙ্গত, জোনাথনের প্রথম ছবি তোলা হয়েছিল ১৮৩৮ সালের দিকে।

প্রাচীনতম এই বাসিন্দা এখন বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে অনেকটাই। দৃষ্টিশক্তিও ক্ষীণ হয়েছে তার এমনকি কোনও কিছুর গন্ধও পাচ্ছে না সে। জোনাথন কলা, লেটুস পাতা খুবই পছন্দ করে। এখন দেখার বিষয় আর কতদিন বেঁচে থাকেন তিনি।