পুরুষ হয়েও অন্য পুরুষের প্রতি আকর্ষণ! তবে কি তিনি আর পাঁচ জনের চেয়ে আলাদা? ছোটবেলা থেকেই এই প্রশ্ন তাড়া করে বেড়াচ্ছে ভারতের প্রথম রূপান্তরকামী(Transgender) পোশাকশিল্পী স্বপ্নিল শিন্ডেকে(Swopnil Shinde)। সময়ের সাথে সাথে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, বাইরে পুরুষের খাঁচা থাকলেও ভেতরে আবদ্ধ রয়েছে একটি নারীমন।
একথা তো সকলেই জানেন যে, বলিপাড়ায় ভালোই নামডাক রয়েছে তার। কাজ করেছেন ইন্ডাস্ট্রির তাবড় তাবড় নায়িকাদের সঙ্গে। আর এখন তো সমাজমাধ্যমেও ভালোই পরিচিতি তৈরি করেছেন তিনি। জানেন কি যে, ‘পাঠান’ ছবির ‘বেশরম রং’ গানে দীপিকার পোশাক ডিজাইন করেছেন স্বপ্নিলই।
নাহ্, গেরুয়া বিকিনি নয়, গানের শুরুতে অভিনেত্রীকে যে ক্রপ টপ এবং চেনমেল স্কার্ট পরে দেখা গিয়েছে, সেই পোশাকটিই ডিজ়াইন করেছেন স্বপ্নিল। এবার নিজের পুরোনো পরিচয় নিয়ে মুখ খুললেন মুম্বাইয়ের এই নামি ফ্যাশন ডিজাইনার। হরনাজ কৌর সান্ধুর উইনিং গাউন নির্মানকারী নিজের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন।
আসলে ছেলে হয়েও মেয়েদের মত আচার আচরণ করতেন বলে তার বন্ধু এবং সহপাঠীরা তাকে নিয়ে ঠাট্টা মসকরা করত। এই ভয়ে স্কুলের গির্জার এক কোনায় লুকিয়ে থাকতেন তিনি। এরপর যখন বুঝতে পারলেন তার নারীসত্বার কথা তখন কথা বললেন ডাক্তারদের সাথে। অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।
স্বপ্নিলের কথায়, ‘আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার মধ্যে কোনও সমস্যা রয়েছে। আমার বন্ধুরা জানত না যে আমি বন্ধ দরজার পিছনে অন্য ধরনের পোশাক পরতাম, হিল জুতো পরতাম, এমনকি মেকআপও করতাম। আমি দু’রকম পরিচয়ে বাঁচতাম।’ তার আরো সংযোজন, ‘লোকজন আমায় ভয় দেখাতেন। ওষুধপত্রের ফলে শরীরে অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে বলে আমায় অনেকে বারণও করেছিলেন।’
তবে সব ভয় উপেক্ষা করে অবশেষে করিয়ে নেন অস্ত্রপচার। নাম বদলে হয়ে স্বপ্নিল হয়ে যান সায়শা। কিন্তু সায়শা নামটি পছন্দ ছিল না তার। সায়শা ওরফে স্বপ্নিলের কথায়, ‘চারটি নামের মধ্যেই যে কোনও একটি নাম পছন্দ করতে হত আমায়। চারটির মধ্যে মস্তানি নাম পছন্দ হয়। কিন্তু বাড়ির কারও পছন্দ হয়নি নামটা। তারা সায়শা নামটি রাখতে বলেন। সায়শা শব্দের মানে ‘অর্থবহ জীবন’। আমি নিজেও আমার জীবনকে অর্থবহ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। তাই শেষ পর্যন্ত সায়শা নামটিই রাখলাম।’