আজকের দিনে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood)অবস্থা খানিকটা ম্রিয়মাণ হলেও একটা সময় ছিল যাকে এককথায় স্বর্ণযুগ বলা যায়। আর সেই স্বর্ণযুগের কিছু কারিগরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন উত্তম কুমার (Uttam Kumar) এবং সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)। এই জুটির কথা আজো গাঁথা আছে প্রতিটা বাঙালির মননে। এককথায় বাঙালিকে প্রেম করতে শিখিয়েছিল এই এভারগ্রীন জুটি।
একের পর এক হিট ছবি। দর্শকদের মনে রাতারাতি জায়গা করেছিলেন কৃষ্ণেন্দু ও রিনা ব্রাউন। সিলভার স্ক্রিনে উত্তম সুচিত্রা আসা মানেই গোটা হল জুড়ে উন্মাদনা। এমনকি সপ্তাহ শেষে টেলিভিশনে যেদিন উত্তম সুচিত্রার ছবি দেখানো হত, মানুষ সমস্ত কাজ ছেড়ে বসে পড়ত টিভির সামনে। তবে পর্দার পিছনে তাঁদের সম্পর্কের সমীকরণ কেমন?
পর্দায় এই জুটির রসায়ন তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতেন সকলে। পাশাপাশি তাদের অফস্ক্রিন সম্পর্ক নিয়েও জানার কৌতুহল ছিল কমবেশি সকলের মনে। একটা সময় টলিপাড়ায় গুঞ্জন ওঠে, সকলের আড়ালে নাকি প্রেম করছেন উত্তম সুচিত্রা। যদিও এই গসিপের উপর সিলমোহর দেননি দুজনের কেউই।
এরপর সুচিত্রা যখন নিজেকে অভিনয় থেকে সরিয়ে নিলেন সেই সময় কারণ হিসেবে সবার আগে যে নামটা সামনে এসেছিল তা হল উত্তম কুমার। অনেকেই বলতেন, মহানায়কের আকষ্মিক প্রয়াণের কারণেই নাকি তিনি অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছিলেন। যদিও এইসব বিষয়ে নিজে কোনোকিছুই বলেননি মহানায়িকা।
তবে এই বিষয়ে একবার মতামত রেখেছিলেন সুচিত্রা কন্যা মুনমুন সেন। জানিয়েছিলেন, মা অভিনয় ছেড়েছিলেন চিত্রনাট্যের কারণে। অভিনেত্রী বলেন, ১৯৭০ দশকের দিকে ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে গল্পের ধরণ। যা কী না সুচিত্রার পছন্দ ছিলনা। পাশাপাশি তিনি যে সব পরিচালকদের সাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন ততদিনে তারাও গত হয়েছেন।
এইসব কারণেই ইন্ডাস্ট্রিতে অস্বস্তি বাড়তে থাকে তাঁর। এত বদলের সাথে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নেবেন তা বুঝতে পারছিলেন না তিনি। মহানায়িকার অভিনয় ছাড়ার প্রসঙ্গে মুনমুন বলেছিলেন, সুচিত্রা সেন একটা সময় প্রশ্ন করতেন তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করবেন? ততদিনে মহানায়কও পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন। এইসব নানা কারণেই নাকি লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের দুনিয়াকে বিদায় জানান ‘দ্য সুচিত্রা সেন’।