শুরুটা হয়েছিল ২০০২ সালের ১৪ জুন। হরনাথ চক্রবর্তীর ‘সাথী’ (Sathi) ছবির হাত ধরে টলিউডে ‘বিজয়’ চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন টলিপাড়ার বস জিৎ (Jeet)। কেরিয়ারের প্রথম ছবি আর সেই প্রথম ছবিই ছিল ব্লকব্লাস্টার হিট। টানা ২৫ সপ্তাহ প্রেক্ষাগৃহের বাইরে ‘হাউসফুল’ বোর্ডের সাক্ষী ছিল বাংলা। ইন্ডাস্ট্রিতে (Tollywood) পা দিতেই সমস্ত রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে জানান দিয়েছিলেন যে, ‘বস’ এসে গেছে।
‘সাথী’ যে বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির বক্সঅফিসে আজও অন্যতম মাইলফলক হিসেবে রয়ে গিয়েছে তা বোধহয় অস্বীকার করার কোনও অবকাশই নেই। আর ডেবিউ ছবির এহেন সাফল্যের পর জিৎ-কেও আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে ‘সাথী’র বিজয় হয়ে উঠেছে বাংলার ‘বস। দীর্ঘ দুই দশকের কেরিয়ারে ৫৫ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন যার মধ্যে ২০ টি ছবিই সুপারহিট।
তবে ডেবিউ ছবি হিট হলেও জিৎ-র কেরিয়ার যে একেবারে মসৃণ ছিল এমনটাও নয়। দক্ষিণ কলকাতার এক অচেনা অজানা গলির সিন্ধি পরিবারের ছেলেটি চেয়েছিল বলিউড (Bollywood) সুপারস্টার হতে। যখনই সময় পেতেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পছন্দের ডায়লগ আউড়ে যেতেন। এরপর তারকা হওয়ার টানে পৌঁছে যান মডেলিং-র দুনিয়ায়। সৌষ্ঠব এবং ঋজু চেহারার কারণে নবাব কোম্পানির গেঞ্জির বিজ্ঞাপনের কাজের সুযোগও পেয়ে যান জিতেন্দ্র মাদনানি (Jitendra Madnani)।
শুরু করেন অভিনয় শেখা। সেই ক্লাসের সূত্রেই ১৯৯৪ সালে পেয়ে যান ‘বিষবৃক্ষ’ এবং ‘জন্মভূমি’ নামের দু-দুটি সিরিয়ালে অভিনয় করার সুযোগ। এরপর আরো কিছু সিরিয়ালের অফার পেলেও তা নাকচ করেন বড় স্বপ্নের জন্য। বলিউডে কেরিয়ার গড়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমালেও সেখান থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয়। এরপর দক্ষিণ ভারতের ‘চান্দু’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে সেটাও মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে।
এরপর হতাশাকে অবলম্বন করে ফিরে আসেন বাংলাতেই। তারপরেই জীবনের দ্বিতীয় এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস শুরু হওয়া বাকি ছিল! ‘সাথী’র হাত ধরে জিতেন্দ্র হয়ে ওঠেন জিৎ। আর বাকিটা তো সকলেই জানেন। গত বুধবার ইন্ডাস্ট্রিতে আবির্ভাবের ২১ বছর পূর্ণ করলেন পর্দার ‘বস’। অভিনেতা তার সফরের কথা মনে করে লিখলেন, “তোমার সঙ্গে ২১ বছর পার করলাম। মনে হচ্ছে যেন, এই সবে শুরু। এখনও আমার মনে অনেক স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তবে উদ্দেশ্য একটাই- আপনাদের বিনোদন দেওয়া। যারা এই সফরে আমার সঙ্গ দিয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে অসংখ্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ ঈশ্বরকেও।”