নিউজ শর্ট ডেস্ক: সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে পুরনো নোট (Old Note) কিংবা কয়েন বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয়ের খবর। তাই কারও কাছে যদি পুরানো নোট কিংবা কয়েন থাকে এবং তিনি যদি সেগুলি বিক্রি করার প্ল্যান করে থাকেন, তাহলে প্রথমেই জানুন RBI অর্থাৎ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রা সংক্রান্ত নিয়মগুলি। কারণ বৈধ মুদ্রা বিক্রি করা অপরাধ। তাই আইন অমান্য করে কেউ এমনটা করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া যেতে পারে। আসুন জানা যাক বিস্তারিত।
এমন অনেক গ্রাহকই আছেন যারা ই-কমার্স সাইটে, ব্যাঙ্কিং নিয়ম লঙ্ঘন করে বেশি দামে পুরনো ও নতুন নোট বিক্রি হচ্ছে। বিক্রির জন্য এগুলির সমস্ত গুণাগুণেরও হিসাব করা হচ্ছে। এই নোট গুলোকে খুবই বিশেষ এবং বিরল নোট বলে মনে করা হচ্ছে। যেমন, ৯০ দশকের পুরনো ১০০ টাকার নোট এখন অনেকেই ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। একইভাবে, ৭৮৬ সিরিজ আর আরবিআই এর প্রাক্তন গভর্নরদের মেয়াদকালের নোট গুলিও দুর্লভ হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
আরবিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী বৈধ মুদ্রা বিক্রি করা অপরাধ। যে বা যারা এমনটা করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রেসনোটে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে আরবিআই-এর লোগো দেখে ভুলেও কারও ফাঁদে পা দেবেন না। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নোটের উপর কোনও কমিশন, চার্জ বা ট্যাক্স নেয় না এমনকি অন্য কাউকে কমিশন বা চার্জ নিতেও দেয় না।
কিন্তু তারপরেও অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ইচ্ছা মতো দামে পুরনো নোট ও কয়েন বিক্রি হচ্ছে। জানা যাচ্ছে একটি ই-কমার্স সাইটে ১০০ টাকার নোট ৯,৯৯৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই নোটটিকে প্রাচীন এবং সীমিত নোট হিসাবে দাবি করা হয়েছে। এমনকি এই নোট ইএমআই-তেও বিক্রি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আধার কার্ড থাকলেই বিনামূল্যে মিলবে এই সুবিধা! কি পরিষেবা দিচ্ছে UIDAI?
নোটটিতে এই বিশেষ নম্বরটি থাকতে হবে-
অনেকে ৭৮৬ নম্বরটিকে বিশেষ বলে মনে করেন। তাই আজকাল বিভিন্ন ই-কমার্স কোম্পানিগুলোও এর সুযোগ নিচ্ছে। তাই ৭৮৬ সিরিজের ২০ টাকার নোট চালু থাকা সত্ত্বেও, শুধুমাত্র এই সিরিজের কারণে সেগুলি অনেকে ৫০০টাকায় বিক্রি করছেন। একইভাবে ৫ টাকার নোট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
পুরনো গভর্নরের নাম ব্যবহার
RBI গভর্নর শক্তিকান্ত দাস, এস ভেঙ্কটরামন, ডি সুব্বারাও এবং সি রঙ্গরাজনের স্বাক্ষরিত ১০ টাকা এবং ২০ টাকার নোটগুলিও অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এই নোটগুলির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৬০ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া পুরানো গভর্নরের সাইন সহ ৭৮৬ সিরিজের নোটের জন্য,২৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এবার দু’হাতে আয় করুন টাকা! কম পুঁজির এই ব্যবসা করলেই পকেটে ঢুকবে মুঠো মুঠো টাকা
পুরনো কয়েন ও নোট বিক্রির নিয়ম
আরবিআই-এর এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক আধিকারিক জানিয়েছেন যে আইন এবং ভারতীয় মুদ্রা আইন অনুসারে, কেউ যদি কোনও পুরানো বা বিশেষ নম্বরযুক্ত মুদ্রার মালিক হন তবে তিনি তা নিজের পছন্দ মতো দামে বিক্রি করতে পারবেন। তবে এই বিশেষ ধরণের মুদ্রা কেউ বিক্রি করতে পারবেন না। তবে কেউ পুরানো কয়েন মজুতকরতে পারবেন না। তাছাড়া নিয়ম অনুযায়ী কেউ হাজার হাজার মুদ্রাও সংগ্রহ করতে পারবে না। এমনটা যদি কেউ করেন তাহলে পাঁচ বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে।
নতুন বান্ডিলের চাহিদা
বিয়ে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ৫,১০,২০,৫০,১০০ টাকার নতুন নোটের বান্ডিলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইদানিং এগুলোই দুই থেকে তিনগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যাংক আধিকারিকদের মতে, নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে নোট বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি। প্রয়োজনে, অ্যাকাউন্টধারীরা তাদের ব্যাঙ্ক শাখা থেকে নতুন নোটের বান্ডিল নিতে পারেন।