নিউজ শর্ট ডেস্ক: এখনকার দিনে চাকরির (Job) তুলনায় ব্যবসা (Business) করাই অনেক বেশি বুদ্ধিমানের কাজ। একথা একবাক্যে স্বীকার করবেন যে কেউ। তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়ে হোক কিংবা কোনো গৃহবধূ অথবা কোনো অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ নাগরিক ভারতে ব্যবসা করার লোকের অভাবও নেই। বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা করার জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তো বটেই এখন পশ্চিমবঙ্গেও ভালো বাজার রয়েছে। তাছাড়া ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে লাভের পরিমাণও অনেক বেশি। আসুন জানা যাক পশ্চিমবঙ্গের এমনই ৫ টিলাভজনক ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যাবসা ( Manufacturing Business) সম্পর্কে।
১) ফেস মাস্ক ম্যানুফ্যাকচারিং
এখনকার এই অতিরিক্ত পলিউশনের যুগে রাস্তাঘাটে বেরোলেই প্রত্যেকেরই দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে ফেস মাস্ক। বিশেষ করে করোনা মহামারীর সময় থেকেই এর চাহিদা বেড়ে গিয়েছে বহুগুণ। তাই বাজারে এই মাস্কের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই কেউ যদি তা ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে তা বিক্রিও হবে সহজেই। তাছাড়া এই মাস্ক তৈরির ব্যবসায় পুঁজিও যেমন কম লাগে তেমনি তৈরী করার প্রক্রিয়াও খুব সহজ।
মাস্ক তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলির মধ্যে অন্যতম হল কাপড়, সেলাই মেশিন, কাগজ,আর সুঁচ আর সুতো। এছাড়াও নকশা কাটার জন্য দরকার কলম, স্কেল এবং কাঁচির। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। মাস্ক তৈরি করার পর তা সরাসরি বাজারে গিয়ে, কিংবা কোনো হোলসেলারকে, অথবা অনলাইন প্লাটফর্মে এমনকি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করেও বিক্রি করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বাড়ি-গাড়ি-ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স সব হবে আপনার! রইল ‘কোটিপতি’ হওয়ার সবথেকে সহজ উপায়
২) স্যানিটাইজার ম্যানুফ্যাকচারিং
করোনাকালে মাস্কের সাথে সাথেই রোজকার জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে স্যানিটাইজার। তাই কম পুঁজির ব্যবসা হিসাবে ইদানিং ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে এই স্যানিটাইজার তৈরির ব্যবসা। নিজের বাড়িতেই স্যানিটাইজার তৈরী করে তা অনেক সস্তায় বিক্রি করা যেতে পারে এবং তা থেকে লাভও হবে অনেক।
এখানে বলে রাখি স্যানিটাইজার তৈরি করার জন্য যে জিনিসগুলি প্রয়োজন হবে সেগুলি হল ইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল (৭০%), অ্যালোভেরা জেল, গ্লিসারিন এবং এসেনশিয়াল অয়েল। কীভাবে তৈরী করবেন? স্যানিটাইজার তৈরি করার জন্য প্রথমেই একটি পরিষ্কার পাত্রে ৭০% ইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহলের সাথে অ্যালোভেরা জেল এবং গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মিশ্রণটি যতক্ষণ না সম্পূর্ণভাবে মিশে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোভাবে নাড়াচড়া করে নিতে হবে। এছাড়াও যদি কেউ চান তাহলে এই মিশ্রণে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে দিতে পারেন। সবশেষে স্যানিটাইজারের মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে ভরে বিক্রি করতে হবে।
৩) পোশাক তৈরির ব্যবসা
বছরের পর বছর ধরে ফ্যাশানেবল এবং স্টাইলিশ পোশাকের জন্য বিখ্যাত কলকাতা। তাই এই রাজ্যে পোশাক তৈরির ব্যবসা করা যে কোনো সময়ের জন্যই খুবই লাভজনক। কিন্তূ বর্তমানে এই ব্যবসাতেও ব্যাপক কম্পিটিশন। তাই মার্কেট ঘুরে দেখে শুনে ভালো করে খোঁজ নেওয়ার পরেই এই ব্যবসা শুরু করতে হবে। তাছাড়া ভালো পোশাক তৈরি করার জন্য শুরু থেকেই দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মী রাখা জরুরি।
তবে আগেই বলে রাখি কম পুঁজিতে এই ব্যাবসা করা সম্ভব নয়। কারণ অন্যান্য ব্যাবসার তুলনায় এই ব্যাবসায় বেশি টাকার প্রয়োজন হবে। তবে পোশাক তৈরির পর তা বিক্রি করার জন্য কেউ সরাসরি বাজারে গিয়ে হোলসেলারকে, কিংবা অনলাইন প্লাটফর্ম যেমন: ফ্লিপকার্ট, আমাজন, মিশো ইত্যাদি কিংবা নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করেও তা বিক্রি করতে পারেন। এই ব্যাবসা শুরু করার জন্য আদর্শ জায়গা হল বড় কোনো শহর।
৪) সরষের তেল উৎপাদন
তেল ছাড়া যে কোনো রান্নাই অসম্পূর্ণ! তাছাড়া অন্যান্য তেলের তুলনায় সরষের তেল শুধু অনেক বেশি উপকারীই নয় সেইসাথে কষিয়ে রান্না করার জন্য কিংবা খাবারে ভালো স্বাদ-গন্ধ আনার জন্য রধুনিরা বরাবরই সরষের তেল ব্যাবহার করেন। তাছাড়া সরষের তেল এমনই একটি জিনিস সারা বছরই যার চাহিদা থাকে তুঙ্গে।
তাই আজকের দিনে যারা নতুন ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য সরষের তেল উৎপাদনের ব্যাবসা একটি দুর্দান্ত লাভজনক ব্যাবসা হতে পারে। এই ব্যাবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ হিসাবে প্রথমে একটি সরষে পেষাই করার মেশিন কিনতে হবে। এরপর স্থানীয় বাজার বা সরাসরি চাষীদের কাছ থেকে সরষে কিনে তা পেশাই করে তেল উৎপন্ন করতে হবে। এরপর সেই তেল বোতলে ভরে বা প্যাকেট করেই বাজারে বিক্রি করতে হবে।
৫) রান্নার মশলা তৈরি
বাঙালি মানেই ভোজনরসিক। আর বাঙালির রসনাতৃপ্তিতে তৈরী যে কোনো খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে বিভিন্ন ধরণের গুঁড়ো মশলার জুড়ি মেলা ভার। তাই বরাবরই যে কোনো খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ রাধুনিরা তাদের রান্নার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের মশলা ব্যাবহার করে থাকেন। পশ্চিমবঙ্গেও কেউ যদি রান্নার এই মশলা তৈরির ব্যাবসা শুরু করতে পারেন তাহলে তা খুবই ভালো ভাবে চলবে। তবে মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে মশলার রং, গন্ধ এবং স্বাদ ভালো না হলে কিন্তু ব্যাবসা চলবে না। ভালো মশলা তৈরি করতে পারলে তা পাইকারি বিক্রি করে ভালো আয় হবে।