নিউজ শর্ট ডেস্ক: ভারতীয় রেল (Indian Railways) মানেই নানান অজানা তথ্যের ভান্ডার। প্রতিদিন ট্রেনেই চেপেই দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে সফর করে চলেছেন লক্ষ লক্ষ যাত্রী। তাই কাছে হোক কিংবা দূরে যে কোনো গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য সকলেই চোখ বুজে ভরসা করেন ভারতীয় রেলের উপর।
আমাদের দেশের বৃহত্তম গণপরিবহন ব্যবস্থা ভারতীয় রেলকে এই কারণে ‘লাইফ লাইন’ বলেও আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। স্বাধীনতার পূর্বে ইংরেজদের হাত ধরে ভারতীয় রেলের সূচনা হলেও বিগত কয়েক দশকে আমুল পাল্টে গিয়েছে ভারতীয় রেলের খোলনলচে।
এখন যাত্রীদের সফর আরও বেশি নিরাপদ এবং আরামদায়ক করে তুলতেই নিত্যনতুন পরিষেবা আনছে ভারতীয় রেল। তাছাড়া যাত্রীদের সুবিধার জন্যই ভারতীয় রেলের আরও বেশ কিছু জরুরী নিয়মও রয়েছে। তবে কাছে দূরে যেখানেই সফর করা হোক না কেন, ট্রেনে সফর করার সময় অত্যন্ত জরুরী ট্রেনের টিকিট।
সাধারণত টিকিট ছাড়া ট্রেন সফর করা রেলের আইনে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু জানলে অবাক হবেন ভারতীয় রেলের এমনও একটি ট্রেন রয়েছে যে ট্রেনে যাতায়াত করার জন্য কোন টিকিট লাগে না। বিনামূল্যেই সফর করা যায় এই ট্রেনে। আর এই ট্রেনটি কোনো নতুন ট্রেন নয়।
বিগত ৭৫ বছর ধরে এই ট্রেন যাত্রীদের বিনামূল্যে সফর করাচ্ছে। ভারতের বিখ্যাত এই ট্রেনটির নাম হল ‘ভাকরা-নাঙ্গাল’ (Bhakra-Nangal)। এই ট্রেনটি মূলত পাঞ্জাব থেকে হিমাচল সীমার মধ্যেই চলাচল করে থাকে। রেল সূত্রে খবর এই ট্রেনটি নাঙ্গাল এবং ভাকরার মধ্যে ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়।
ভারতের স্বাধীনতা লাভের পরের বছরেই অর্থাৎ ১৯৪৮ সালেই এই ট্রেনটি প্রথম চালু হয়েছিল। আসলে সেই সময়েই ভাখড়া নাঙ্গাল বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন তার মাঝে পরিবহনের কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। তাই বাঁধ বানানোর জন্য যে বড় বড় জিনিসপত্র বা মেশিনের দরকার পরতো তা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্যই এই ট্রেনটিকে চালু করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: স্লিপার ক্লাসের টিকিট কেটে AC কামরায় ভ্রমণ! ৯৯% মানুষই জানেন না IRCTC-র এই সিক্রেট টিপস
শিবালিক পাহাড় পেরিয়ে প্রায় ১৩ কিমির দূরত্ব অতিক্রম করে ট্রেনটি নিজের গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়। পুরনো ডিজাইনের এই ট্রেনের বগিগুলি কাঠের তৈরি। তবে আগে এই ট্রেনে ১০টি বগি থাকলেও এখন মাত্র ৩টি বগি নিয়েই যাতায়াত করে এই ট্রেন।
সেই থেকে এখনও পর্যন্ত প্রতিদিন কেউ না কেউ এই ট্রেনে সফর করে থাকেন। প্রথমে যাত্রীদের সংখ্যা কম হলেও বর্তমানে এই ট্রেনেই রোজ প্রায় ৮০০ জন যাত্রী সফর করেন। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকেই অসংখ্য পর্যটক এই বাঁধের সৌন্দর্য্য দেখতে এবং ফ্রি ট্রেনের সফর উপভোগ করতে আসেন।