নিউজশর্ট ডেস্ক: ভারতবর্ষ মানেই বৈচিত্র্যময় দেশ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী এই দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন নানান বৈচিত্র্য। আমাদের এই দেশেই রয়েছে এমনই একটি গ্রাম যেখানে প্রবেশ করা যায়,রাস্তা দিয়ে হাঁটাও যায়, কিন্তু ভুল করেও ছোঁয়া যায় না কিছু। আমাদের দেশের সবথেকে বিচ্ছিন্ন এই গ্রামে বাইরের গ্রামের বাসিন্দাদের কোন কিছুই ছুঁতে দেওয়া হয় না।
এমনিতে এই গ্রামে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের প্রবেশে কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই গ্রামের কোন বাড়ি,গাছ,স্থাপত্য এমন কি কোনো গ্রামবাসীদেরও ছুঁতে দেওয়া হয় না। যা শুনে প্রাথমিকভাবে মনে হতে পারে হয়তো গ্রামের মানুষজনের জাত পাতের ভেদাভেদের কারণেই বোধ হয় এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কিন্তু আসলে তা মোটেই নয়, হিমাচল প্রদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই গ্রামে গেলে চোখ জুড়িয়ে যায় পর্যটকদের। যেদিকে তাকানো যাবে এই গ্রামের সেদিকটাই যেন রং তুলিতে আঁকা কোন এক ক্যানভাস। কিন্তু এই গ্রামের মানুষ জনের মধ্যে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারির আসল কারণ জানলে অবাক হবেন যে কেউ।
আমাদের দেশের হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) বিচ্ছিন্ন এই গ্রামটির (Isolated Village) নাম মালানা (Malana)। মালানা নদীর ধারে ৮৭০১ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত শান্ত শিষ্ট পাহাড়ি নির্জনতায় ঘেরা ছবির মত সুন্দর এই থেকেই দেখা যায় চাদেরখানি আর ডিও টিব্বা পাহাড়ের চূড়া। এই গ্রামের মানুষজন আজও আধুনিক জনজীবন থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন নিজেদের।
আরও পড়ুন: এক ট্রেনেই হবে রামলালা আর বৈষ্ণোদেবীর দর্শন! তীর্থযাত্রীদের জন্য বড় উপহার ভারতীয় রেলের
আসলে তাঁরা সবসময় নিজেদের বাকি দুনিয়া থেকে আড়াল করে রাখতেই ভালোবাসেন। গোটা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত এই গ্রামের মালানা ক্রিম। যা তৈরি হয় ক্যানাবিস গাছ থেকে। এই মালানা ক্রিম এক ধরনের হাশিশ। সবার থেকে বিচ্ছিন্ন এই গ্রামের সংস্কৃতি নিয়ম নীতি একেবারেই নিজস্ব। যা বাকি সবার থেকে একেবারেই আলাদা।
বহু ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক এই গ্রামে ট্রেক কিংবা হাইককিং এর জন্য আসেন। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যক ভাষায় বর্ণনা করা অসম্ভব। তবে এখানকার গ্রামবাসীদের মধ্যে এখনো বজায় রয়েছে তাদের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব শাসন। আসলে এখানকার গ্রামবাসীরা মনে করেন তারা ‘আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট’ এর বংশধর। তাই তাঁদের মধ্যে নাকি আজও বইছে আর্য রক্ত। আর এই ধারণা থেকেই তারা গোটা বিশ্বের থেকে নিজেদের উচ্চতর বংশমর্যাদা সম্পন্ন বলে মনে করেন। আর এই কারণেই তাঁরা কাউকে নিজেদের ছুঁতে পর্যন্ত দেন না। বাইরের কোন মানুষের সংস্পর্শেই আসেন না তাঁরা।