নিউজ শর্ট ডেস্ক:ট্রেন হোক বা বাস রাস্তাঘাটে বেরিয়ে যে-কোনো জায়গায় সফর করার সময় মুখরোচক খাবার থাকলে মন্দ হয় না। বিশেষ করে ট্রেনে বাসে উঠলে হামেশাই দেখা যায় সবুজ মটর ভাজা (Green Peas)। বিশেষ করে এই সবুজ মটরের প্রতি বাচ্চাদের আকর্ষণ বরাবরই একটু বেশি থাকে।
কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন প্যাকেট ভর্তি এই সবুজ মটর ভাজা আদতে সত্যিই মটরশুঁটি কিনা! এখানে বলে রাখি সবুজ রঙ দেখেই কেউ যদি ওই মটরগুলিকে মটরশুঁটি ভাজা ভেবে থাকেন তাহলে কিন্তু মস্ত বড় ভুল করছেন তিনি।
ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ট্রেনে-বাসে হকাররা যে সমস্ত সবুজ মটর বিক্রি করছেন তা আসলে মটরশুঁটি নয়। এ বিষয়ে শিয়ালদা বৈঠকখানা মার্কেটে খোঁজ খবর নিতেই এক দোকানদার জানিয়েছেন এত সবুজ মটর পাওয়া যাবে কোথায়? এসব আসলে কারিগররা মটরের সঙ্গে রং (Color) দিয়ে সবুজ মটর বানিয়ে দিয়ে যায় আর তারা সেগুলিই বিক্রি করেন।
তবে কোথা থেকে এই সবুজ মটর ভাজা তৈরি হয় তা অবশ্য তিনি জানেন না বলেই দাবি করেছেন। বাজারে এই সবুজ মটরের ছোট প্যাকেটের দাম ৫ টাকা আর বড় প্যাকেটের দাম হয়ে থাকে দশ টাকা। শিয়ালদা শাখার একজন হকার জানিয়েছেন সারাদিনে তিনি নাকি ফেরি করেই প্রায় ৫ কেজির সবুজ মটর বিক্রি করেন।
আরও পড়ুন: অন্য গাড়ির মতোই বদলাতে হয় ট্রেনের চাকাও! এই চাকার আয়ু কতদিন জানেন?
মূলত বাচ্চাদের মধ্যেই সবুজ মটরের আকর্ষণ থাকে বেশি। জানা যাচ্ছে, আসল সবুজ মটরের রঙ অত গাঢ় সবুজ হয় না। কারণ আসল সবুজ মটর বানানোর সময় মটরশুঁটি শুকিয়ে নিয়ে তারপরে তা ভাজা হয়। আর এই সমস্ত মটরের ক্ষেত্রে দেখা যায় হলুদ মটর রং করে সবুজ মটরে পরিণত করা হয়।
প্রতিদিন কলকাতা শহর এবং আশপাশের জেলাগুলিতে আনুমানিক কয়েকশো কেজি মটর সবুজ মটর বিক্রি হচ্ছে। সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় এই সমস্ত সবুজ মটর গুলিতে যে সবুজ রং মেশানো হয় তা কিন্তু কোন ফুড কলার নয়। এগুলি আসলে শিল্পে ব্যবহৃত রং বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কালার।
আর এই সমস্ত ক্ষতিকারক রঙ মেশানো খাবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুদেরই খেতে দেখা যাচ্ছে। এ-প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক জানিয়েছেন আসল সবুজ মটরশুটিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন,ফসফরাস ও ভিটামিন এ কে এবং সি। এছাড়া এর মধ্যে থাকা প্রোটিন ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
সেই সাথে পেশি শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে এই মটর। কিন্তু ট্রেনে বসে যে সমস্ত সবুজ রঙের মটরশুঁটির বিক্রি হচ্ছে তাতে যে কৃত্রিম রঙ মেশানো থাকে তা খেলে হমে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি পেট খারাপ-ও হতে পারে। এমনকি তৈরি হয় মারণ রোগ ক্যান্সারেরও ঝুঁকিও।