নিউজ শর্ট ডেস্ক: ‘অশ্লীল’ ভিডিও কাণ্ডে বিগত কয়েকদিন ধরেই শিরোনামে রয়েছেন প্রাক্তন জেডিএস নেতা ও সাংসদ প্রজ্বল রেভান্না। ইতিমধ্যেই কূটনৈতিক পাসপোর্টের (Diplomatic Passport) ভিত্তিতে ব্যাঙ্গালোর ছেড়ে জার্মানিতে পাড়ি দিয়েছেন প্রজ্বল। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকেও।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হল এই কূটনৈতিক পাসপোর্ট কি? কারা এর ব্যবহার করতে পারেন? এবং অন্যান্য পাসপোর্ট থেকে এই কূটনৈতিক পাসপোর্ট কতটা আলাদা? আসুন এই সম্পর্কের বিস্তারিত জানা যাক। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক ভারতে মোট কয় ধরনের পাসপোর্ট (Indian Passport) রয়েছে?
আমাদের দেশে ভারত সরকারের অধীনে মোট চার ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে নীল পাসপোর্ট, রয়েছে কমলা পাসপোর্ট এছাড়াও আছে সাদা পাসপোর্ট আর ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট বা মেরুন পাসপোর্ট।
এই পাসপোর্টগুলোর প্রত্যেকটির রং আলাদা হয়ে থাকে যাতে সাধারণ ভারতীয়দের থেকে সরকারি আধিকারিক এবং রাজনৈতিক আধিকারিকদের আলাদা করা যায়। এছাড়া এই সমস্ত পাসপোর্ট দেখেই যাতে ভারতের বাইরে অন্যান্য দেশের কাস্টমস এবং পাসপোর্ট চেকিং অফিসাররা সহজেই তাদের শনাক্ত করতে পারেন।
আরও পড়ুন: মাত্র ১০ হাজারের SIP-তে পেতে পারেন ১০ কোটি টাকা! শুধু অপেক্ষা করতে হবে এই কয়েকটা দিন!
নীল পাসপোর্ট:
নীল পাসপোর্ট হলো আমাদের দেশের সাধারণ নাগরিকদের পাসপোর্ট। এটি সেই পাসপোর্ট যা শুধুমাত্র আমাদের সাধারণ নাগরিকদের জন্যই জারি করা হয়ে থাকে। গাঢ় নীল রঙের এই পাসপোর্ট বিদেশ মন্ত্রক ব্যক্তিগত বা পেশাগত প্রয়োজনে সাধারণ নাগরিকদের জন্য ইস্যু করে থাকেন
কমলা পাসপোর্ট:
এরপরে রয়েছে কমলা পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট হলো ভারতের সেই সমস্ত নাগরিকদের জন্য, যারা শুধুমাত্র দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এই পাসপোর্ট বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য জারি করা হয় যারা অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বিদেশে যান।
সাদা পাসপোর্ট:
এরপরেই আছে সাদা পাসপোর্ট। ভারত সরকার সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণকারী কর্মকর্তাদের এই সাদা রঙের পাসপোর্ট দিয়ে থাকে। কাস্টমস চেকিং-এর সময় অন্যান্য দেশে তাদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের মত আচরণ করা হয়। জানা যায় একটি সাদা পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীকে আলাদা করে আবেদন জমা দিতে হয়। সেখানে জানাতে হয় কেন তার এই পাসপোর্ট দরকার? কারণ এই ধরনের সাদা পাসপোর্ট থাকলে ব্যবহারকারীরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
কূটনৈতিক পাসপোর্ট:
এরপর সবশেষে রয়েছে কূটনৈতিক পাসপোর্ট। এই কূটনৈতিক পাসপোর্ট সাধারণত হাইপ্রোফাইল সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক কর্মকর্তা আর সরকারি প্রতিনিধিদের দেওয়া হয়ে থাকে। এই পাসপোর্টের জন্য মোট পাঁচ শ্রেণীর ক্যাটাগরি থাকে। যার মধ্যে প্রথমেই থাকে কোনো রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি, তারপর দ্বিতীয় স্থানে থাকে ভারত সরকারের কোনো সিনিয়র অফিসার যারা অফিসিয়াল কাজে বিদেশে যাচ্ছেন। তৃতীয়ত ফরেন সার্ভিসের এ এবং বি গ্রুপ অফিসার। চতুর্থত বিদেশ বিদেশ মন্ত্রক আর আই এফ এস-এর কোন পরিবারের সদস্য। আর পঞ্চম ক্যাটেগরিতে রয়েছেন সরকারি সফরকারি ব্যক্তিরা। যার মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী,সাংসদ এবং রাজনীতিবিদর।
উপরিউক্ত পাসপোর্ট গুলির মধ্যে সবথেকে বেশি শক্তিশালী হলো এই কূটনৈতিক পাসপোর্ট। যাদের কাছে এই পাসপোর্ট থাকে বাইরের বেশিরভাগ দেশে যাওয়ার জন্য তাদের ভিসার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া ভিসার প্রয়োজন হলেও সাধারণ পাসপোর্ট ধারীদের তুলনায় তারা অনেক দ্রুত এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভিসা পেয়ে থাকেন। আর কূটনৈতিক পাসপোর্ট ধারীদের নিরাপত্তা এবং তল্লাশির ক্ষেত্রেও অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে।