নিউজশর্ট ডেক্সঃ বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কাজের যা হাল তাতে একটা ভালো চাকরির খোঁজ মেলা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্তায় দ্বিতীয় আয় হিসাবে ব্যবসাকে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু মুশকিল যে কোনো ব্যবসা চাইলেই শুরু করা যাই না। তারজন্য ভালো করে বুঝে তবেই নামতে হবে। কতটাকা বিনিয়োগ করতে হবে কত লাভ হবে সেই সব দিক খেয়াল রাখতে হবে। আজ আপনাদের এমনই একটা ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানাবো যেটা পার্টটাইমেও করা যাবে আর মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয়ও করা যাবে।
বাড়িতেই শুরু করুন দুর্দান্ত ব্যবসা
আজ যে ব্যবসার সম্পর্কে বলবো সেটা হল মাশরুম চাষ। এতে পুঁজি কম লাগলেও লাভ বেশ ভালো। তাই অনেকেই বাড়িতে থাকা জায়গাতেই এই চাষ শুরু করে প্রতিমাসে একটা মোটা টাকা ইনকাম করছেন। কিভাবে শুরু করতে হবে? কি কি জিনিস প্রয়োজন হবে আর কিভাবে বিক্রি করে টাকা পাবেন তার বিস্তারিত জানানো হল আজকের প্রতিবেদনে।
মাশরুম চাষ
এই চাষের জন্য একটা ঘর হলেই যথেষ্ট। প্রথমে ছোট থেকে শুরু করে পরবর্তীকালে বড় ঘরের ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। শুরুতেই খড় লাগবে, যেটা ১ ইঞ্চি সাইজের করে কেটে বিচুলি বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেগুলোকে বস্তায় চেপে ভরে ভিজিয়ে রাখতে হবে ৪-৫ ঘন্টামত। ভেজানোর জন্য একটা বড় পাত্রে পরিমাণ মত চুন, ব্লিচিং আর জল মিশিয়ে তাতে খড়ের বস্তা ভিজিয়ে রাখার পর সেগুলোকে রোদে দিয়ে কিছুটা শুকিয়ে নিতে হবে।
বিচুলি শুকিয়ে নেওয়ার পর তাতে আবারও চুন ও ফাঙ্গিসাইড মিশিয়ে নিতে হবে। সেটা হয়ে গেলে মাশরুম চাষের প্যাকেটের মধ্যে কিছুটা বিচুলি ভরে নিন। তারপর গায়ের দিয়ে মাশরুম স্পন দিয়ে আবারও বিচুলি দিয়ে প্যাকেটের মুখ চেপে বন্ধ করে দিতে হবে। আর শেষে প্যাকেটে বেশ কয়েকটা ফুটো করে দিতে হবে। এভাবেই মাশরুম চাষের জন্য প্যাকেট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেগুলোকে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে স্যাঁতস্যাতে ঘরে রেখে দিতে হবে।
মাশরুম প্যাকেজ ঝুলিয়ে দেওয়ার পর ২০ দিনের মধ্যেই সেটা থেকে ওয়েস্টের মাশরুম তৈরী হওয়া শুরু হবে। তখন প্যাকেটের গায়ে ফুটো করে জল স্প্রে করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর জল স্প্রে করতে থাকলে ৩০ দিনের মধ্যেই মাশরুম সম্পূর্ণ তৈরী হয়ে যাবে। এরপর সেগুলো সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে দেওয়া যাবে। অফ সিজেনে ১৬০ টাকা আর সিজেনে ৯০-১২০ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করা যাবে মাশরুম।
লাভের হিসাব
মোটামুটি যদি একটা হিসাবে করা হয় তাহলে দেখা যাবে ওয়েস্টের মাশরুম চাষের জন্য স্পন বা বীজ থেকে শুরু করে বিচুলি, চুন, ব্লিচিং, ফাঙ্গিসাইড, প্যাকেট সব মিলিয়ে ৬০ টাকার মত খরচ হয় একটি পকেটে। যেটার থেকে মাসে দেড় কেজি মত মাশরুম পাওয়া যাবে প্রতিমাসে। এই হিসাবে যদি ১০০ টাকা কেজি হিসাবেও ধরা হয় তাহলে ১৫০ টাকা প্রতিমাসে পাওয়া যাবে। অর্থাৎ প্রায় ১৫০ % লাভ।
এবার আপনার যদি একটি ঘরে অন্তত ২০০টি মত মাশরুম প্যাকেট লাগিয়ে চাষ করেন তাহলে প্রতি মাসে অনায়াসেই ১৮ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। তবে যাঁরা এই ব্যবসা শুরু করেন তারা মোটামুটি ৫০০-১০০০ প্যাকেট নিয়ে চাষ শুরু করেন। সেক্ষেত্রে কম করে ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। আজকাল অনেকেই বাড়িথেকে এই ব্যবসা শুরু করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ভালো টাকা রোজগার করছেন। তাই চাইলে আপনিও এই কাজ করে ভালো উপার্জন করতেই পারেন।
এভাবেই সিঙ্গুরের নরেন দাস লকডাউনের সময় নিজের মাশরুম চাষের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। প্রথমে মাত্র ২৫ টা প্যাকেট দিয়েই শুরু করেছিলেন চাষ যেটা ডাবলেরও বেশি প্রফিট হয়েছিল। বর্তমানে ৭০০০ প্যাকেট নিয়ে চাষ করেন তিনি যার ফলে প্রতিমাসেই লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতে পারছেন তিনি।