কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে শুনানি হয়েছে। জুনিয়ার ডাক্তারের সাথে হওয়া ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলনের সৃষ্টি করেছে। আজ সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে হাসপাতালগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং শৌচালয় ও পৃথক বিশ্রাম কক্ষের নির্মাণের অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আদালত সরকারকে এই কাজগুলো ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানায় যে, এই কার্যক্রমগুলির অগ্রগতি অত্যন্ত ধীর।
ভুক্তভোগীর নাম ও ছবি প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা
আদালত তার পূর্ববর্তী নির্দেশনাকে পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তিলোত্তমার নাম ও ছবি প্রকাশ করার অনুমতি নেই। শুনানির শুরুতেই আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদীওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, মৃত ট্রেনি ডাক্তারটির পিতা-মাতা সামাজিক মাধ্যমে তাদের সন্তানের নাম এবং ছবিগুলি প্রকাশ করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তদন্তের অগ্রগতি
সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় আদালত CBI এর কাছে জানতে চায়, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত কতজন কর্মী আছেন? তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে কিনা। আদালত রাজ্য সরকারের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করতে সিবিআইকে নির্দেশ দেয়।
চিকিৎসকদের প্রতিবাদ
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বলা হয়েছে যে, রেসিডেন্ট ডাক্তাররা আভ্যন্তরীণ রোগী বিভাগ ও বহির্বিভাগের কাজ করছেন না। তবে, রেসিডেন্ট ডাক্তারদের পক্ষে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং দাবি করেন, তারা সব জরুরি ও প্রয়োজনীয় পরিষেবায় অংশগ্রহণ করছেন।
আগামী শুনানি
সুপ্রিম কোর্ট আগামী ১৪ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত জানায় যে, তারা সিবিআইয়ের রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তবে তদন্তের জন্য বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকার করে।
চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি
৯ সেপ্টেম্বর, সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর ঘটনার মোকাবিলায় রেকর্ড থেকে চার্জশিটের অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে রিপোর্ট দাবি করেছে। ২২ আগস্ট আদালত হাসপাতালের মৃত ডাক্তারীর ঘটনা সংক্রান্ত মামলা রুজু করতে দেরি হওয়ায় কলকাতা পুলিশকে ভর্ৎসনা করে।
সুপ্রিম কোর্টের এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল ডাক্তারদের ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় এই ধরনের ঘটনায় জড়িত সকলের প্রতি কঠোর বার্তা পাঠাতে চাইছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে। এখন দেখার বিষয় হল, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই নির্দেশনার ভিত্তিতে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নে কতটা সাফল্য অর্জন করতে পারে।