উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরির (Lakhimpur Kheri) ভদাইয়া গ্রামে চিতা বাঘের আক্রমণের জেরে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। ৫০ বছর বয়সী কৃষক, প্রভু দয়াল ইতিমধ্যেই চিতা বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন। যখন প্রভু দয়াল তার গ্রামের কাছে একটি আখের ক্ষেতে কাজ করছিলেন তখনই এই ভয়ানক ঘটনাটি ঘটেছে। আসলে এই অঞ্চলটি বেলা পাহাড়ার সংরক্ষিত অরণ্যের কাছে অবস্থিত। তাই সেখান থেকেই বেরিয়ে বাঘ আক্রমণ করেছে।
বাঘের থাবায় মৃত ৫০ বছরের কৃষক
দক্ষিণ খেরি বন বিভাগের (DFO) বন কর্মকর্তা সঞ্জয় বিসওয়াল ঘটনার সত্যতা কনফার্ম করেছেন। প্রথমে গ্রামের মানুষ মনে করেছিল আক্রমণটি কোনও বাঘ করেছে, তবে পরে পায়ের ছাপ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি একটি চিতা বাঘ ছিল। এই নিয়ে এলাকায় তৃতীয়বারের আক্রমণের ঘটনা ঘটল। ২৭ আগস্ট, এক বাঘের আক্রমণে আরেক কৃষক, অম্বরীশ কুমার, নিহত হয়েছিলেন। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর মুড়া আছি গ্রামের জাকিরও বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারান।
বন দফতরের পদক্ষেপ
বর্তমানে বন দফতরের দল এলাকায় সক্রিয়ভাবে নজরদারি করছে। বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাঘ ধরার জন্য ট্রাঙ্কুইলাইজার টিমও পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন একঝাক হয়ে চলাফেরা করেন ও জঙ্গলের কাছাকাছি এলাকায় একা না যান। ভদাইয়া গ্রাম মুড়া আছি থেকে প্রায় ২০-২৫ কিমি দূরে অবস্থিত। আগের ঘটনাগুলির পর থেকেই বন দফতরের টিমগুলোকে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য এই এলাকার বন্যপ্রাণীদের আক্রমণ প্রতিরোধ করা এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এলাকাবাসীদেরও সতর্ক থাকতে হবে
এই আক্রমণের পর স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাসীরা বেশ আতঙ্কিত। বন বিভাগের কর্মকর্তারা বারবার স্থানীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। গ্রামের মানুষদের বলা হচ্ছে, তারা যেন কাজ করার সময় বেশি সতর্ক থাকেন ও জঙ্গলের কাছাকাছি এলাকায় কাজ করার সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেন। প্রভু দয়ালের মৃত্যু পরবর্তী, বন বিভাগ ওই এলাকায় টহল এবং নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছে।
বন্যপ্রাণী ও মানুষের দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি
প্রসঙ্গত, এই ঘটনাগুলো বনাঞ্চল ও গ্রামীণ জনবসতির সীমান্তবর্তী এলাকায় মানুষের নিরাপত্তার জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বনাঞ্চলের প্রসারণ এবং মানুষের জনবসতির সীমানা সংকুচিত হওয়ার ফলে এই ধরনের আক্রমণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জঙ্গলে খাদ্যের অভাব এবং মানুষের অরণ্যে প্রবেশের কারণে এই সংঘর্ষ বাড়ছে।