বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে চলেছে আর কিছুদিনের মধ্যেই। আগামী নভেম্বর মাসে বিমস্টেক (BIMSTEC) শীর্ষ সম্মেলনের সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস (Muhammad Yunus) এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠক নিয়ে দুই দেশের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বাড়ছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ও মুহাম্মদ ইউনুসের ভূমিকা
বাংলাদেশে বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুস। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ড. ইউনুস দেশের শাসন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিচালনা করছেন। তবে এই পরিবর্তনের পরেও বাংলাদেশে সম্পূর্ণ শান্তি ফিরে আসেনি। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা ভারতের কানে পৌঁছানোর পর ভারত সরকার উদ্বিগ্ন। নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ বিষয়ে নজর রাখছেন।
মোদী-ইউনুস বৈঠক: কী আলোচনা হতে পারে?
বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ব্যাংককে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বৈঠকের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে এটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বৈঠকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন যে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলি এবং রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের আলোচনার পর, এই বৈঠকের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে।
বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনের গুরুত্ব
বিমস্টেক হল একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা, যেখানে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, নেপাল, এবং ভুটান অংশ নেয়। দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৫টি এবং দুটি দেশকে একত্রিত করে এই সংস্থা। এ বছর শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে থাইল্যান্ড। এই সম্মেলনে সামুদ্রিক উন্নয়ন, ডিজিটাল প্রসার, অর্থনৈতিক চুক্তি এবং কারিগরি উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ এখানে একটি বিশেষ ভূমিকা নেবে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার দিকে জোর দেবে।
মোদী ও ইউনুসের বৈঠকের প্রত্যাশা
নরেন্দ্র মোদী এবং ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে এই প্রথম বৈঠকটি হতে চলেছে। এর আগে নিউইয়র্কে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ড. ইউনুসের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। তবে, মোদী-ইউনুসের এই বৈঠক যদি সফল হয়, তাহলে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় এটাই যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলি ভবিষ্যতের জন্য কেমন ফল বয়ে আনে।