বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্কট ও মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের কারণে আজ শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। বৃহস্পতিবার সেনসেক্স ১,৮০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গিয়েছে। আর নিফটি ৫০ ২৫,২৫০ পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। এশিয়ার অন্যান্য শেয়ারবাজারের মতো ভারতীয় বাজারেও বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেয়ার ইচ্ছা কমে গেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সেনসেক্স ও নিফটির বড় পতন
সেনসেক্স ১,৮১১ পয়েন্ট বা ২.১৫% কমে ৮২,৪৫৫.০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, এবং নিফটি ৫০ ৫৫৪ পয়েন্ট কমে ২৫,২৪২ পয়েন্টে এসেছে। দুপুর ২:১০ নাগাদ এই পতনের ছবি দেখা গিয়েছে। বিএসইতে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির বাজার মূলধন প্রায় ১০.৫৬ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে আর মোট বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৬৪.৩ লাখ কোটি টাকা।
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি বাড়ার আশঙ্কাতেই বিশ্বব্যাপী বাজারগুলির পতন ঘটেছে। এদিকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের জেরে তেলের দাম বাড়তে পারে। যা ভারতের মতো তেল আমদানি নির্ভর দেশগুলির জন্য বেশ উদ্বেগজনক। ফলে শেয়ারবাজারেও এর তীব্র প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে।
বাজার পতনের প্রধান ৪ কারণ
মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও তেলের দাম বৃদ্ধি
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত শেয়ারবাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ইরান থেকে ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ার ঘটনায় উত্তেজনা চরমে রয়েছে, এবং মনে করা হচ্ছে এই সংঘাত আরও বাড়তে পারে। এর ফলে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজকের বাজারে তেলের দামও বেড়েছে, যা ভারতের মতো তেল আমদানিকারকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
শেয়ারবাজারে বিধিনিষেধ
সাম্প্রতিক সময়ে সেবি (SEBI) বাজারে নতুন নিয়ম চালু করেছে, বিশেষত ফিউচারস ও অপশনস (F&O) সেগমেন্টে। এতে সপ্তাহিক মেয়াদ সীমিত করা এবং কন্ট্রাক্ট সাইজ বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। নতুন এই বিধিনিষেধ বাজারের ওপর আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
চিনের বাজারের পুনরুজ্জীবন
এছাড়া, চিনের বাজারে সাম্প্রতিককালের উদ্ভাবনী পদক্ষেপ ও অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেওয়ার ফলে ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা টাকা তুলে নিচ্ছে। চিনের SSE কম্পোজিট ইনডেক্স ৮% বেড়েছে এবং গত এক সপ্তাহে প্রায় ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতীয় বাজার থেকে প্রায় ১৫,৩৭০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। এটাও মার্কেট পরে যাওয়ার কারণ হতে পারে।