রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার কর্মবিরতির প্রভাব চরমে উঠেছে। ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় তথা Supreme Court তাদের একাধিকবার কাজে ফেরার নির্দেশ দিলেও, তা উপেক্ষা করেই চলছে আন্দোলন। যার ফলে এবার কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছে আন্দোলনরত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। এই মামলার দায়ের করেছেন রাজ্যের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার রাজু ঘোষ।
আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা
রাজু ঘোষের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে আগামীকাল, শুক্রবার। মামলাকারীর মতে, এই কর্মবিরতি আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। আজ অর্থাৎ শুক্রবারেই এই মামলার শুনানো হওয়ার কথা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
এই কর্মবিরতির ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে না ফেরায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমনকি বেশ কিছু রোগীর মৃত্যুর খবরও রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় অনেকেই আদালতের প্রতি অসম্মানের অভিযোগ তুলছেন মামলাকারী।
আরজি কর মামলা এবং বর্তমান পরিস্থিতি
এই পরিস্থিতির পাশাপাশি রাজ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি। গত অগস্ট মাসের ঘটনা যেখানে নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই ঘটনায় সিবিআই তিনজনকে গ্রেফতার করে, যার মধ্যে একজন প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও টালা থানার ওসি রয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে একাধিক সেলিব্রিটিরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এমনকি এখনও প্রতিবাদ জারি রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি নিয়ে আলোচনা
সাম্প্রতিক সময়ে জুনিয়র ডাক্তাররা সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করে এই কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে, অনেকেই মনে করছেন আগামীকালের মামলার শুনানির পর এই অচলাবস্থা কাটতে পারে। রাজ্যের স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি এবং মানুষের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দ্রুত সমাধান আসবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাই কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানির পরই বোঝা যাবে, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন কীভাবে প্রভাব ফেলবে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যের প্রশাসনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন অপেক্ষা শুনানি আসার।