Taslima Nasrin shares Durga Murti vandalism on Bangladesh

দুর্গাপ্রতিমা ভাঙা হচ্ছে বাংলাদেশে! পুজোর আমেজের মাঝেই ভয়ংকর ছবি শেয়ার করলেন তসলিমা

দুর্গাপূজা কেবলমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য আবেগ, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক মিলনের প্রতীক। পশ্চিমবঙ্গে যখন মহালয়ার পেরোতেই পুজোর মরশুম গাঢ় হচ্ছে, তখন বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন। একাধিক স্থানে মূর্তি ভাঙার খবর ও পুজোর আয়োজনের বিরুদ্ধে হুমকি এসে পৌঁছেছে। এইসব ঘটনার মাঝে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় কিভাবে তাদের প্রিয় দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে।

বাংলাদেশে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি এবং আতঙ্ক

বাংলাদেশে দুর্গাপূজা বেশিরভাগ জায়গায় উৎসাহের সাথে পালন করা হয়, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পূজার আয়োজনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রতিকূলতা দেখা যাচ্ছে। মূর্তি ভাঙা, হুমকি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় পূজা উদ্যোক্তাদেরকে পুজো আয়োজন করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি ঢাকা জেলার ধামরাই থানার দক্ষিণ পাড়া সার্বজনীন কালী মন্দিরে কার্তিক ও দুর্গা প্রতিমার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যা বাংলাদেশের খ্যাতনামা লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন।

তাছাড়া, বরিশালের শ্যামপুরেও দেবীমূর্তির উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে ও অনেকে পুজোর আয়োজন নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া ও হুমকির চিঠি

বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে যে, বেশ কিছু স্থানে পুজোর আয়োজন বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি, কিছু এলাকায় উড়ো চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, দুর্গাপূজা আয়োজন করতে চাইলে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর যদি চিঠির বিষয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ বা গণমাধ্যমকে জানানো হয়, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে।

এ ধরনের হুমকি ও আক্রমণ, বিশেষ করে দুর্গাপূজার মতো একটি বড় উৎসবের সময়, দেশের সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যকে ক্ষুণ্ণ করছে ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং হুমকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া, শান্তির জন্য নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূস যখন বাংলাদেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন অনেকে আশা করেছিলেন যে, তার সময়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত হবে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি যেন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।

পূজা উদ্যোক্তাদের আশা

এইসব প্রতিকূলতার মাঝেও বাংলাদেশে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই আশা করছেন যে, সমস্ত বাধা ও হুমকি উপেক্ষা করে তারা তাদের প্রিয় দুর্গাপূজা পালন করতে পারবেন। যদিও পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ, তবুও পূজা উদ্যোক্তারা ও সাধারণ মানুষ সাহস হারাচ্ছেন না। তারা সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত এবং কার্যকরী পদক্ষেপের অপেক্ষা করছেন, যাতে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করা যায়।

Partha Sarathi Manna

Partha Sarathi Manna

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক, রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন থেকে অ্যাডভান্স মাল্টিমিডিয়া ডিগ্রি। পড়াশোনা শেষে বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়াতে কর্মজীবন শুরু ২০২০ সালে। বিনোদন, লাইফস্টাইল, টেকনোলজি থেকে ভ্রমণ সম্পর্কে লিখতে দক্ষ। তবে পড়াশোনা বিষয়ক লেখালিখিতেও বেশ আগ্রহী। কাজের বাইরে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দেখতে, ঘুরতে যাওয়াই নেশা মেল - [email protected]

X