পার্থ মান্নাঃ কাজের ফাঁকে ছুটি হোক বা পুজোর ছুটি একটু ঘুরতে যেতে পারলেই মন ভালো হয়ে যায়। অবসর সময়ে কারোর ভালো লাগে সমুদ্র তো কারোর ভালো লাগে পাহাড়। যদি আপনার পছন্দ হয় সমুদ্র, তাহলে দীঘা নিশ্চয়ই গিয়েছেন। কিন্তু মুশকিল হলো দীঘায় সারা বছরই ভিড় লেগে থাকে। তবে চিন্তা নেই আজ আপনাদের এমন এক সমুদ্র সৈকতের খোঁজ দেব যেখানে সমুদ্র আছে কিন্তু ভিড় নেই। কোথায়? জানতে হলে আজকের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ে নিন।
কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টা পথ, একটা চারচাকা গাড়ি ভাড়া করে বেরিয়ে পড়তেই পারেন এই সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে। যেখানে নেই ভিড়ভাট্টা মানুষের কোলাহল নেই শহরে ব্যস্ততা। ভাবছেন কোথায় এমন জায়গা? উত্তরটা সকলে না জানলেও কিছু জন জানেন। সেটা হল উড়িষ্যার দুবলাগড়ি বাগদা বিচ। হ্যাঁ, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতে রিলের দৌলতে কিছুটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে জায়গাটি। তবে এখনো পর্যটকদের ভিড়ে সেই ভাবে পৌঁছায়নি বাগদা বিচে।
কিভাবে পৌঁছাবেন বাগদা বিচ?
আপনি যদি প্রাইভেট গাড়িতে করে যান তাহলে কলকাতা থেকে কোলাঘাট অবধি যেতে হবে। এরপর দাঁতন হয়ে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগোতে হবে। হলদিপদার কাছ থেকে বাঁদিকে বাঁক নিয়ে জাতীয় সড়ক ছেড়ে কিছুটা গ্রাম্য পথ ধরে এগোলেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। আর যদি ট্রেনে আসেন তাহলে নামতে হবে বালাসোর স্টেশনে। এরপর টোটো অটো কিংবা কোন গাড়ি ভাড়া করে নিশ্চিন্তে পৌঁছে যেতে পারেন বাগদা বিচে।
বাগদা বিচে ঘুরতে গিয়ে কি কি দেখতে পারেন?
অনেকেই হয়তো ভাবছেন সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে যখন যাত্রা তখন সমুদ্রসৈকত ছাড়া আর কিই বা দেখা যেতে পারে! তবে চাইলে কিন্তু কাছাকাছির মধ্যেই আরো কয়েকটা জায়গা ঘুরে দেখতেই পারেন। এরমধ্যে প্রথমেই রয়েছে নীলগিরি হ্রদ। নীলগিরি পাহাড়ের কোলেই রয়েছে এই হ্রদটি। পড়ন্ত বিকেলে যদি এই হ্রদের কিনারে যেতে পারেন তাহলে একটা অপরূপ সূর্যাস্তের সাক্ষী হতে পারেন।
এছাড়াও বাগদা বিচ থেকে চল্লিশ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে এক জগন্নাথ মন্দির। খানিকটা পুরীর মন্দিরের মতোই তৈরি করা হয়েছে ৭৮ ফুট উঁচু এই মন্দিরটি। এরপর ঘুরে আসতে পারেন ক্ষীরচোরা গোপীনাথ মন্দির থেকেও। মন্দিরের নাম থেকেই আশা করি বুঝে গিয়েছেন এখানে পূজিত হন গোপীনাথ। মন্দিরের অন্তরে গোবিন্দ ও মদনমোহনের কালো পাথরের মূর্তি রয়েছে। এখানেই প্রসাদ হিসেবে তিন রকমের ক্ষীর পাওয়া যায় এটা শাল পাতা দিয়ে মোড়া, একদি দড়ি দিয়ে বাধা ও আরেকটি ছোট হাড়িতে দেওয়া হয়।
থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা
দুবলাগড়ি বাগদা বীচে পৌঁছে ঘোরার ব্যবস্থা তো হল এবার থাকা ও খাওওয়ার কি হবে? উত্তরে যেটা প্রথমেই বলতে হবে সেটা হল এখানে নামিদামি কোন হোটেল আপনি পাবেন না। বরং কিছু নেচার ক্যাম্প বা প্রাইভেট রিসোর্ট রয়েছে। যেখানে টাবুতে বা প্রাইভেট রুমে ভাড়া থাকতে পারেন। যেখানে থাকবেন সেখানেই চারবেলার খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত হয়ে যাবে।