অমিতাভ বচ্চনকে চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে প্রচুর সুপারহিট ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। তার এমন কিছু সিনেমা আছে যা বহু বছর কেটে যাবার পরেও দর্শকদের মনে সেভাবেই জনপ্রিয় রয়ে গিয়েছে। সেই জনপ্রিয় সিনেমাগুলির মধ্যে একটি হলো ‘শোলে (Sholay)’। যেই সিনেমা আজও দর্শকেরা দেখতে খুব পছন্দ করেন। জয়, ভীরু আর গব্বর সিং এর অসাধারণ অভিনয় আজও সিনেপ্রেমীদের মনের চিলেকোঠায় রয়ে গিয়েছে।
গব্বর সিং ওরফে আমজাদ খানের সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের সেই লড়াই আজও মনে রেখেছেন আসমুদ্রহিমাচল। সিনেমায় তারা একে অপরের শত্রু হলেও বাস্তব জীবনে দুজন দুজনের খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। জানা যায়, এই আমজাদ খানের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন বলিউড শাহেনশাহ। গ্ল্যাম্বার ছবিতে একসাথে কাজ করছিলেন দুজনে। একদিন শুটিংয়ের লোকেশনে পৌঁছানোর জন্য কোনো কারণবশত দেরি হয়ে যায় আমজাদ খানের। তাই ট্রেন বা ফ্লাইট কোনটাই না পাওয়াতে গাড়ি করে গোটা পরিবারকে নিয়ে শুটিং এর লোকেশন এর দিকে রওনা দেন অভিনেতা।
কিন্তু গোয়ার থেকে কিছু কিলোমিটার দূরে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় আমজাদ খানের গাড়ি। সেই দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকেরা অভিনেতা এবং তার পরিবারকে গোয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার পরিবারের বাকি লোকেরা আশঙ্কাজনক অবস্থায থেকে ঠিকভাবে ফিরলেও অভিনেতার ব্যাপক পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এই খবর জানতে পেরেই হাসপাতালে ছুটে যান অমিতাভ। সেসময় আমজাদ খানের অবস্থা এতটাই খারাপের দিকে ছিল যে কেউ হাসপাতালে কাগজে সই পর্যন্ত করতে রাজি ছিলেন না।
তখন অমিতাভ বচ্চন বন্ধু হিসেবে সেই কাগজে সই করেন এমনকি ভগবানের দূত হিসেবে বন্ধুকে নিজের রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচান অমিতাভ বচ্চন। এই ঘটনা অভিনেতা নিজেই একবার অন্নু কাপুরের রেডিও শো-তে এসে খোলসা করেছেন। সেই সময় যদি আমজাদ খানকে রক্ত দেওয়া না হতো তাহলে হয়তো তিনি কোমায় চলে যেতেন কিংবা তার প্রাণ সংশয় হতে পারত। বন্ধু যে বন্ধুর জন্য যে কোন কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারে সেটা করে দেখিয়েছিলেন খোদ অমিতাভ বচ্চন।