জীবন এত সহজ নয়, জীবনে টিকে থাকতে হলে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। প্রতি মুহূর্তে লড়াই না করলে বেঁচে থাকা অসম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে এই লড়াইয়ের প্রত্যেক পদক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায় মারাত্মক কঠিন। এই কঠিন লড়াই যে করতে পারবে, সেই জীবনে সফল হয়ে দাঁড়াতে পারবে। এই লড়াইয়ে যে যেতে তাকেই তো বলা হয় প্রকৃত যোদ্ধা। আজ আপনাদেরকে এমনই এক যোদ্ধার কথা জানাবো।
যিনি একজন মহিলা। তার স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার ও সন্তানের সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন ওই মহিলা। মধ্যপ্রদেশের কাটনি রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিদিন কুলির কাজ করেন তিনি। এনার নাম সন্ধ্যা মারাভি। এই কাজে তিনি নতুন নয়, ২০১৭ সল্ থেকেই এই কুলির কাজ করে সংসারের হাল ধরেছেন সন্ধ্যা দেবী। বর্তমানে তিনি তাঁর নামে একটি রেলওয়ে পোর্টারের লাইসেন্সও পেয়েছেন।
প্রথম কাজের দিন থেকেই অত্যন্ত আগ্রহ ও অধ্যাবসায় এবং সাহসের সাথে কাজ করছেন তিনি। এই কাজ করেই নিজের সন্তানদের অফিসার বানাতে চান ওই মহিলা। এই কাজের আগে স্বামী বেঁচে থাকাকালীন ও শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। তাঁর স্বামী ভোলারাম দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর মারা যান। আর স্বামীর মৃত্যুর পর সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিতে হয়েছে তাকে। আর বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি এবং সন্তানদের মুখে খাওয়ার তুলে দিতে সেইসময় খুঁজতে থাকেন একটি চাকরি।
আর তখনই জানতে পারেন যে কাটনি রেলস্টেশনে একজন কুলির দরকার। তাই তিনি কোনো কিছু না ভেবেই এই চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। বর্তমানে ওই রেলস্টেশনে ৪৫ জন পুরুষ কুলির কাজ করেন, আর সেখানে সন্ধ্যা একমাত্র মহিলা যিনি এই কাজটি করছেন। গতবছর তিনি কুলির ৩৬ নম্বর ব্যাজ পেয়েছিলেন। খুব কষ্ট করেই তাকে এই কাজ করতে হয়। তবুও থামেননি সন্ধ্যা। কুন্দম থেকে প্রতিদিন ৯০ কিমি যাতায়াত করে কুলির কাজ করতে হয় তাকে। এই কাজের সময় তার সন্তানদের দেখেন তার শ্বাশুড়ি মা।
সন্ধ্যার তিন সন্তান। বড় ছেলের নাম শাহিল, যার বয়স ৮ বছর। এর পরের ছেলেটির নাম হর্ষিত। তার বয়স ৬ বছর এবং ছোট মেয়ে হল পায়েল, তার বয়স ৪ বছর। তিনি চান তার সন্তানেরা বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে অফিসার হয়ে দেশের সেবা করুক। তিনি যখন যাত্রীদের জিনিসপত্র নিয়ে কুলির কাজ করেন, রেলের প্ল্যাটফর্মে হাঁটেন, তখন সবাই তাঁকে দেখে অবাক হয়ে যান। তাঁর এই কাজের প্রশংসাও করেন সকলে। আসলে নারীর এমন কাজকে এই লড়াইয়ের মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।