বিনোদন,বলিউড,বলিউড গসিপ,মনোজ বাজপেয়ী Entertainment,Bollywood,Bollywood Gossip,Manoj Bajpayee

Papiya Paul

ছিল না ট্রেনের টিকিট কাটার টাকা, স্টেশনেই কাটাতেন সারারাত, কোনো গডফাদার ছাড়াই আজ প্রতিষ্ঠিত মনোজ বাজপেয়ী

বলিউডে (Bollywood) নেপোটিজম এবং বহিরাগতদের সুযোগ না দেওয়ার কথা বারংবার উঠে এসেছে। তবুও বলিউডে এমন কিছু প্রতিভাবান অভিনেতা রয়েছেন যারা কোন গডফাদার ছাড়াই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের নাম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এমন একজন অভিনেতা হলেন মনোজ বাজপায়ি (Manoj Bajpayee)। তার বাবা একজন কৃষক ছিলেন। কিন্তু তবুও তার ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন তিনি। তার বাবা চেয়েছিলেন মনোজ বড় হয়ে ডাক্তার হোক।

   

কিন্তু মনোজ সেদিকে না গিয়ে অভিনেতা হওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন। যদিও এই পথ অতটা সহজ ছিলো না। তিনি দ্বাদশ শ্রেণী পাস করার পর প্রথমবার দিল্লি পৌঁছেছিলেন যখন তার কাছে টিকিটের টাকা পর্যন্ত ছিল না। টিটি এড়ানোর জন্য সারারাত ট্রেনে ঘুরে ঘুরে বেরিয়েছেন। এরপর দিল্লি পৌঁছানোর পর যখন গাড়িগুলো আইপিও ব্রিজে থামল তখন তিনি মনে মনে ভেবেছিলেন যে তিনি জীবনে এত পরিশ্রম করবে যে একদিন তার ছবি সেখানে থাকবে।

তিনি ১৭ বছর বয়সে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন এবং তার সঙ্গে থিয়েটারে যোগ দেন। বাড়ির কাউকে না জানিয়ে তিনি জীবনের বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অভিনেতা একসময় বলেছিলেন যে তার গ্রামের লোকেরা তাকে ঠাট্টা করতো তাকে প্রত্যাখ্যান করত সকলেই তাকেও অকেজো বলে মনে করতেন। কিন্তু অভিনেতা থেমে যাননি। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ইংরেজি, হিন্দি, ভোজপুরি ভাষা শিখেছিলেন। আবার ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামাতে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনবার তার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।

এরপর ১৯৯৪ সালে তার জীবন সম্পূর্ণভাবে বদলে যায়। সেসময় তিনি জানতে পারেন শেখর কাপুর তাকে ‘ব্যান্ডিট কুইন’ এ কাস্ট করতে চায়। এরপর ধীরে ধীরে শুরু হয় তার পথ চলা। তিনি পাঁচ বন্ধুর সাথে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। আর কাজের জন্য এখনও হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতেন। জীবনের প্রথম শট নেওয়ার পর গেট আউট কথাটা শুনতে হয়েছিল মনোজকে। তার নায়কের মত চেহারা ছিল না, গডফাদার ছিল না বলেও অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাকে।

১৯৯৩-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি মুম্বাইয়ের সমস্ত বড় এবং ছোট স্টুডিও গুলি ঘুরে দেখেছিলেন। এর ঠিক ৪ বছর পর মহেশ ভাটের টিভি সিরিজে একটি চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। সেখানে তাকে প্রতি পর্বের জন্য দেড় হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেয়া হতো। এরপর ১৯৯৮ সালে রামগোপাল ভার্মার এটি কাজে সুযোগ পান তিনি। এরপর ধীরে ধীরে সত্য, শূল, পিঞ্জার , গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর, আলিগড় ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। আর ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ ওয়েব সিরিজে অসাধারণ অভিনয় এখন প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছেন অভিনেতা।