চলচ্চিত্রের পর্দা থেকে রাজনীতি নিজের দক্ষতায় এক আলাদাই পরিচিতি তৈরি করেছেন রাজ বব্বর। পথনাটক আর থিয়েটার দিয়ে কেরিয়ার শুরু করা এই অভিনেতা ৮০ এর দশকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের এক আলাদাই সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন। জানিয়ে রাখি আজ এই কিংবদন্তির জন্মদিন। ২৩ জুন ১৯৫২ সালে প্রদেশের টুন্ডলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
কথা হবে রাজ বব্বরকে নিয়ে আর তাতে উঠে আসবেনা তার প্রেমের গল্প তাই কখনও হয়! ৮০ এর দশকের সেরা অভিনেত্রী স্মিতা পাতিলের কাছে মন হারিয়েছিলেন তিনি। সেইসময় তিনি স্মিতার প্রেমে এতোটাই মশগুল ছিলেন যে কোনো বাধাকেই বাধা মনে করেননি। এমনকি বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অভিনেত্রীর সাথে লিভ-ইন-এ ছিলেন রাজ বব্বর। তারপর সমস্ত প্রতিকূলতাকে হারিয়ে গাঁটছড়া বাঁধেন দুজন। কিন্তু, প্রকৃতি সম্ভবত উভয়ের এই মেলামেশাকে অনুমোদিত করেনি এবং ঘটনাচক্রে স্মিতা পাতিল চিরতরে রাজ বব্বরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। সর্বোপরি, কীভাবে দুজনের প্রেমের গল্প শুরু হয়েছিল এবং কীভাবে তা শেষ হয়েছিল তাই বলবো আজকের এই প্রতিবেদনে।
রাজ বব্বর নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে বরাবরই বেশ আলোচনায় থাকতেন। সালটা তখন, ১৯৭৫, সহপাঠী নাদিয়া বব্বরের প্রেমে পড়েন তিনি। দুজনেই ছিলেন ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার পড়ুয়া। ১৯৭৫ সালে দুজনের বিয়ে হয় এবং নাদিয়া জাহির থেকে পদবী বদলে তিনি হন নাদিয়া বব্বর। বিয়ের পর দিল্লিতে বসবাস শুরু করে এই তারকা দম্পতি। একটি মেয়েও হয় তাদের। মেয়ে জুহির জন্মের পর যথারীতি পরিবারের দায়িত্ব বাড়তে থাকে রাজের উপর। এমতাবস্থায় রাজ সিদ্ধান্ত নেন যে, অভিনয়কেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করবেন তিনি। সেই মতো মায়া নগরীর উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান এবং এরপরেই আসে গল্পে টুইস্ট। মুম্বইতে এসে বলিউডে পা রাখার পর সম্পূর্ণ বদলে যায় তার জীবনের মোড়।
সাল ১৯৮২, ‘ভিগি পলকে’ ছবির শুটিং চলছে। সেখানেই প্রথম দেখা হয় রাজ আর স্মিতার। ছবির মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন দুজন। রাজ বব্বর নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, ওই সময় ওড়িশার রাউরকেলায় এই ছবির শুটিং চলছিল। ছবির শুটিং চলাকালীনই স্মিতার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় তার। বৈঠক চলাকালীন দুজনেই মেতে ওঠেন খোশ গল্পে। সেই সময় স্মিতার বলা কিছু কথা তার মনে গেঁথে যায়। মুগ্ধ হয়ে যান স্মিতাকে দেখে।
ধীরে ধীরে মুগ্ধতা পরিনতি পায় প্রেমে। একাধারে নাদিয়া এবং স্মিতা। এমতাবস্থায় স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা নাদিরার কানেও যায়। ভেতরে ভেতরে তিনি ভেঙে পড়লেও নিজের সন্তানদের মুখ চেয়ে শক্ত করেন নিজেকে। সন্তান এবং নিজের নাট্যজীবন নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত করে নেন তিনি। যদিও সেই সময় রাজের সাথে আইনি ডিভোর্স নেননি তিনি।
এরপর রাজ নাদিরা আলাদা হয়ে গেলে স্মিতাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন রাজ। যদিও সেটাও বিশেষ সহজ ছিলোনা। দুই সন্তানের বাবার হাতে নিজের মেয়েকে তুলে দিতে রাজি ছিলোনা স্মিতার পরিবার। কিন্তু অভিনেত্রী স্মিতা, যিনি যে ছবির চরিত্র যেমন নিজে বেছে নিতেন একইভাবে নিজের জীবনের সিদ্ধান্তও নিজেই নিতেন। সব বাধা অতিক্রম করে তিনি গাঁটছড়া বাঁধেন রাজের সাথে। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলেও হয় কিন্তু কোনোকিছু বোঝার আগেই সন্তান জন্মের মাত্র ১৫ দিন পর মাত্র ৩১ বছর বয়সে এই পৃথিবীকে চিরবিদায় জানান তিনি।