এমন অনেক মানুষই আছেন যারা চাকরি ছেড়ে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত হতে দেখতে চান। ভালো পোস্টে চাকরি ছেড়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না তারা। অনেকে আবার ব্যবসার সাথে কৃষি কাজের দিকে মনোনিবেশ করতে পছন্দ করেন। ঠিক যেমন এই ব্যক্তি। কোন ৪৯ বছর বয়সী কেরালার কোচির বাসিন্দা জেমস জোসেফ। এই ব্যক্তির সম্পর্কে আপনাদের আজ এই প্রতিবেদনে জানাবো।
এই ব্যক্তি প্রথমে একটা মাইক্রোসফট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। একদিন তিনি তার এক বন্ধুর সঙ্গে তাজ হোটেলে খেতে গিয়ে মাশরুম ও মাংস খেয়েছিলেন। আর সেখানে গিয়েই তিনি মনে করেন কাঁঠাল মাংসের থেকে অনেক বেশি উপকারী। আর এরপরে সঙ্গে সঙ্গে তিনি হোটেলের শেফ এর কাছে জানতে চান কাঁঠাল কেন ব্যবহার করা হয় না। এই প্রশ্নের উত্তরে শেফ জানান যে কাঁঠালের গন্ধ এবং আঠার জন্য কাঁঠালের ব্যবহার করা হয় না।
এর সাথে সারা বছর কাঁঠাল পাওয়া যায় না। এই কথা শোনার পর ওই ব্যক্তি আলু টিক্কি বার্গার না খেয়ে কাঁঠাল টিক্কি বার্গার খান। আর এই খাবার এতটাই পছন্দ হয় তার যে তিনি মনে করেন এই রকমের খাবারের ব্যবসা তিনি খুলবেন। আর তারপর নিজের শহরে ফিরে এসে কাঁঠালের সংরক্ষণ সম্পর্কে বেশ কিছুদিন গবেষণা করেন। এর পরেই তিনি জানতে পারেন যে কাঁঠালকে যদি ফ্রিজে ঠিক মতো রাখা হয় তাহলে এটি বছরের পর বছর সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে।
এটি বাজারে চাহিদা মেটাবে। খাদ্য এবং সবজি হিসেবে এটিরব্যবহার করা যেতে পারে। এর সাথে কাঁঠালের মধ্যে ভিটামিন এ, ভিটামিন, ক্যালসিয়া,ম জিংক, আয়রন অনেক গুণাগুণ থাকে। যা শরীরের পক্ষে ভীষণ উপকারী। এই কাঁঠাল হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। শরীরে রক্তের পরিমাণ বজায় রাখে। সর্বোপরি ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে কাঁঠালের। আর তারপরে ২০১৩ সালে ‘জ্যাকফ্রুট ৩৬৫’ নামে একটি কোম্পানি তিনি খোলেন। আর সেখানে কাঁঠালের প্রক্রিয়াকরণ শুরু করেন।
এই ব্যক্তি ‘ন্যাশনাল স্টার্টআপ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। এমনকি তার লেখা বই ‘গড অন অফিস’ ভারতের তৎকালীন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডক্টর এপিজে আবদুল কালামকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি জেমসকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। এরপর তার সঙ্গে কথাবার্তা বলে কালাম এটাও বলেছিলেন যে বাজারের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি তাকে সাহায্য করবেন। কিন্তু তিনি আর বেঁচে নেই। তার শুভকামনা জেমস এর সঙ্গে রয়েছে।
পাঁচ বছর কঠোর পরিশ্রমের পর হয়েছেন জেমস আজ সফল ব্যবসায়ী। এই কাঁঠাল দিয়ে তিনি এমন আঠা তৈরি করেছেন যেটি উত্তর ভারতের রুটি এবং দক্ষিণ ভারতের ধোসা বানাতে কাজে লাগে। আর এখন বেশ সফল হয়েছে তার এই ব্যবসা। এই ব্যবসা করেই লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন জেমস।