টিনসেল নগরীর মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খানের নাম তো সবাই জানেন। ৩৮ বছরের কেরিয়ারে এক গুচ্ছ ব্লকব্লাস্টার ছবি উপহার দিয়েছেন সিনেমাপ্রেমীদের। তার মধ্যে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত’, ‘দিল’, ‘দিল হ্যায় কি মানতা না’, ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’, ‘হাম হ্যায় রাহি প্যায়ার কে’, ‘রঙ্গিলা’, ‘রাজা হিন্দুস্তানি’, ‘সরফারোশ’,লাগান’, ‘রং দে বাসন্তী’, ‘থ্রি ইডিয়টস’ এবং ‘দঙ্গল’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ছবি বাছাই নিয়ে বরাবরই বড্ডো খুঁতখুঁতে তিনি। বছরে একটিই ছবি করবেন কিন্তু সেটা বড্ডো নিখুঁত করবেন, এই নীতিতেই বিশ্বাসী তিনি। আর এই কারণেই এমন বহু ছবির অফার আমির ছেড়ে দিয়েছেন যা পরবর্তীকালে ব্লকবাস্টার হিট প্রমাণিত হয়েছে। আর এই তালিকায় সবচেয়ে আগে থাকবে সলমন এবং শাহরুখ অভিনীত ছবিগুলি। চলুন দেখে নিই কোন কোন ছবিকে হেলায় সরিয়ে দিয়েছিলেন আমির।
১) সাজন : নির্মাতারা ‘সাজন’ ছবির জন্য প্রথমে আমির খান এবং সলমন খানের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু আমির ছবিটি করতে রাজি হননি। এর পর ছবিতে সঞ্জয় দত্তের এন্ট্রি হয়। ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সাজন’ সেই বছরের সর্বোচ্চ আয় করা ছবি ছিল। বলাইবাহুল্য এই ছবিটি সঞ্জয় দত্ত এবং সলমন খানের কেরিয়ার আরো একধাপ এগিয়ে দেয়।
২) ডর : ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ডর’ ছবির রাহুল মেহরা চরিত্রটি শাহরুখ খানের কেরিয়ারে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র ছিলো। তবে খুব কম লোকই জানেন যে এই ভূমিকাটি প্রথম আমির খানকে দেওয়া হয়েছিল। আমির রাজি না হওয়ার পর শাহরুখকে এই চরিত্রের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
৩) হাম আপকে হ্যায় কৌন : ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিটি পছন্দ করেননি এমন কেউ ভারতে কমই আছে। ১৯৯৪ সালমান মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি সলমন এবং মাধুরী দীক্ষিতের কেরিয়ারে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় হিট। তবে এই ছবির জন্য নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন আমির। কিন্তু সেইসময় এরকম একটা বড়ো প্রোজেক্ট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
৪) দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে : ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ ছবির সংলাপ আজও মানুষের মুখে ঘোরে। আইকনিক চরিত্র ‘রাজ মালহোত্রা’র জন্য প্রথমে আমির খানকে ভাবা হলেও এধরনের রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি তিনি। পরবর্তীকালে শাহরুখের কেরিয়ারকে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে দেয় এই ছবিটি। এই জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী ছবিটি হিন্দি সিনেমার সেরা ১০টি সেরা চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এই ছবিটি গত ২৭ বছর ধরে মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দির সিনেমা হলে নিযুক্ত রয়েছে, যা নিজেই একটি বিশ্ব রেকর্ড।
৫) দিল তো পাগল হ্যায় : শাহরুখ খান, মাধুরী দীক্ষিত এবং করিশমা কাপুর অভিনীত জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী ছবি ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। এই ছবিতে ‘রাহুল’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। খুব কম লোকই জানেন যে আমির খানকে এই ভূমিকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পাশাপাশি করিশমা কাপুর এই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার পান।
৬) মহব্বতে : ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কাল্ট ক্লাসিক ছবি ‘মহব্বতে’। ছবিতে আরিয়ানের চরিত্রটিতে প্রথমে আমিরকে ভাবা হলেও তিনি এই প্রস্তাবে রাজি হননি। পরবর্তীকালে ছবিটি যায় শাহরুখের কাছে। এই ছবির সাফল্য এবং জনপ্রিয়তা তো সকলেরই জানা।
৭) বজরঙ্গি ভাইজান : জানা যায় দক্ষিণ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিখ্যাত লেখক ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ, আমির খানকে মাথায় রেখেই এই ছবির গল্প লিখেছিলেন। কিন্তু তার আগেই সলমন খান মাঝখানে এন্ট্রি নিয়ে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর গল্প কিনে নেন। এটি বলিউডের অন্যতম সেরা হিট।