দামোদর নদ থেকে এক কেজি সাইজের ইলিশ ধরা পড়েছে। এই ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করেছে। ইলিশ সাধারণত নোনা জলের মাছ হলেও, দামোদরের মতো মিষ্টি জলের নদীতে এই মাছ পাওয়া যায়, তবে সেটা খুবই বিরল। ডিভিসি জল ছাড়ার পর জল বাড়তে থাকায়, হয়তো সমুদ্র থেকে দামোদর নদে এসে ঢুকেছে ইলিশ। আর মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ে সেই ইলিশ।
ইলিশ কেন মিষ্টি জলে?
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইলিশ মাছ সাধারণত সমুদ্রের নোনা জলে বসবাস করে। তবে ডিম পাড়ার সময় তারা মিষ্টি জলের নদীতে চলে আসে। তাই মাঝে মাঝে দামোদর, গঙ্গা বা অন্যান্য নদীতে ইলিশ ধরা পড়ে। যদিও এই ধরনের ঘটনা খুবই কম। সেই কারণেই দামোদর নদীতে ইলিশ ধরা পড়ায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ও সকলেই ভিড় জমিয়েছিলেন মাছের নিলামে। জানলে অবাক হবেন ১ কেজি ওজনের এই ইলিশ মাছের দাম উঠেছিল ২১০০ টাকা।
পদ্মার ইলিশ নিয়ে অনিশ্চয়তা
এদিকে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এই বছর দুর্গাপুজোর আগে পদ্মার ইলিশ আসা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কারণে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না থাকায় এই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। হাওড়ার পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর পুজোর আগে বাংলাদেশ থেকে ৫,০০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানির অনুমতি থাকলেও, এই বছর তা হয়নি।
২০১৮ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তির পর থেকে প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে বাংলাদেশ ইলিশ পাঠাতে রাজি হত। তবে এই বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পদ্মার ইলিশ আমদানির বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। মাঝে অবশ্য কিছু পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি মিলেছিল বাংলাদেশের সরকারের তরফ থেকে তবে পরবর্তীকালে সেটাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাঙালির পুজোয় ইলিশের চাহিদা
প্রসঙ্গত, ইলিশের স্বাদ ছাড়া দুর্গাপুজো যেন অসম্পূর্ণ মনে হয় বাঙালির কাছে। তাই প্রতি বছর এই সময়টাতে পদ্মার ইলিশের জন্য ভোজনরসিকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা দেখা যায়। তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রপ্তানির অনিশ্চয়তার কারণে এই বছর পুজোয় ইলিশের বাজারে সংকট দেখা দিতে পারে। তাই এই পরিস্থিতিতে দামোদর নদে ধরা পড়া ইলিশ যেন কিছুটা হলেও বাঙালির ইলিশের চাহিদা মেটাতে পারে।