নিউজ শর্ট ডেস্ক: পাঠ্য পুস্তকে আমরা সকলেই পড়েছি পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার তবে কিছুটা কমলালেবুর মতো চ্যাপ্টা। আসলে পৃথিবীর উত্তর এবং দক্ষিণ ভাগ সামান্য চাপা। জন্ম লগ্ন থেকে এমনই নানা ধরনের রহস্যে মোড়া আমাদের এই পৃথিবী। যা নিয়ে আজও নিরন্তর গবেষণা করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু অনেকের মনেই বারবার প্রশ্ন জেগেছে পৃথিবীর কোনো শেষ রাস্তা (World’s last road) কি আছে? এই নিয়ে একসময় হাজার হাজার গবেষণাও করেছিলেন ভূ-বিজ্ঞানীরা। শেষে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে পৃথিবীর শেষ রাস্তা আছে। তবে তারপর শেষ হয়ে যায় এই দুনিয়া। পৃথিবীর এই শেষ রাস্তার পর আর কিছুই দেখা যায় না।
কারণ পৃথিবীর একেবারে শেষ রাস্তা মিশে গিয়েছে অসীমে। আসলে পৃথিবীর এই শেষ রাস্তাটি রয়েছে সুদূর ইউরোপে। এই রাস্তার নাম হল ‘ই ৬৯’ হাইওয়ে (E-69 Highway)। কিন্তু এই পৃথিবীর এই শেষ রাস্তায় যাওয়া কি সম্ভব? উত্তর হ্যাঁ, হলেও এখানে কিন্তু সারাক্ষণ ওঁত পেতে থাকে বিপদ। তাই ভুল করেও এই রাস্তায় একা যাওয়া নিষেধ।
এই ই-৬৯ হাইওয়ে অবস্থিত উত্তর গোলার্ধে অর্থাৎ নিরক্ষরেখার উপরের দিকে। কিন্তু এই রাস্তাকে কেন পৃথিবীর শেষ রাস্তা বলা হয় জানেন? কেনই বা এখানে একা যেতে নিষেধ করা হয়? ঠিক কি কারণে এখানে একা যেতে ভয় পান মানুষ? এই রাস্তা কোথা থেকে শুরু হয়? আর শেষ হয়েছে কোথায়?
রহস্যময়ী এই ই-৬৯ উত্তর মেরুর গা ঘেঁসে চলে গিয়েছে। যা উত্তর ইউরোপের নর্ডক্যাপকে সংযুক্ত করেছে নরওয়ের সাথে। এই রাস্তাটি যেখানে শেষ হয়েছে তারপর আর কিছুই নজরে আসে না। কারণ এর পরেই রয়েছে সমুদ্র-হিমবাহ আর তুষার। এখানকার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধবধবে সাদা বরফে ঢাকা।
আরও পড়ুন: মাত্র ৪৫ টাকা বিনিয়োগে মিলছে ২৫ লক্ষ রিটার্ন! LIC-র এই স্কিমে টাকা রাখলেই হতে পারেন লাখপতি
তাই একা গেলে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই পৃথিবীর এই শেষ রাস্তায় একা যেতে বারণ করা হয়। শুধুমাত্র একটি দল নিয়েই সেখানে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়। এমনকি এই রাস্তায় গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ। এখানেই শেষ নয় জানলে অবাক হবেন এখানে শীতকালে টানা ছমাস অন্ধকার থাকে, আর গরমকালে টানা ছ’মাস সূর্যের আলো দেখা যায়। তাই শীতকালে যেমন এখানে কোন দিন নেই তেমনি গরমকালে এখানে রাতের দেখা মেলে না।
শীতকালের এখানকার তাপমাত্রা পৌঁছায় মাইনাস ৪৩ ডিগ্রীতে। আর গরমকালের তাপমাত্রা থাকে শূন্য ডিগ্রীতে। এই হাইওয়ে ই -৬৯ তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ১৯৩০ সাল নাগাদ। এই হাইবে তৈরির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছিল ১৯৩৪ সালে। ধীরে ধীরে এই রাস্তার অনেকটাই সম্প্রসারণ হয়েছে। বর্তমানে এই রাস্তার দৈর্ঘ্য ১২৯ কিলোমিটার। বর্তমানে এই রাস্তায় বেশ কয়েকটি হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট-ও রয়েছে।