নিউজশর্ট ডেস্কঃ বাংলার গর্ব অরিজিৎ সিংকে চেনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। মুশিদাবাদের জিয়াগঞ্জের ছেলে গানের দৌলতেই বিশ্ব জয় করেছেন। তবে সেলিব্রিটি হয়েও তাঁর আচার ব্যবহার খুবই সাধারণ। যে কারণে বারেবারে মানুষের মন জিতেছেন তিনি। কলকাতার আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ডে যখন উত্তাল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশ, টলিতারকারাও পথে নেবেছিলেন তখন অরিজিৎ সিংয়ের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন।
যদিও অরিজিৎ সিং সোশ্যাল মিডিয়াতে খুব একটা সক্রিয় থাকেন না। তবে এবার লাইভ এসে নিজের বক্তব্য রাখলেন তিনি। ভিডিওতে যেমন একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন তেমনি জানালেন নিজের শারীরিক স্থিতি। শেষে বর্তমান পরিস্থিতি আর নির্যাতিতার হয়ে বিচার চেয়ে একটি গানও শোনালেন যার নাম ‘আর কবে’?
নিজের বাড়ির ষ্টুডিও থেকেই লাইভ এসেছিলেন গায়ক। ভিডিওর শুরুতেই বলেন, প্রশ্ন তো অনেক। যে উত্তর পাওয়া যাচ্ছে তাতে কেউই সন্তুষ্ট হচ্ছে না। সবাই সবটা দেখতে পাচ্ছে, সবারই বুদ্ধি আছে। আমি কোথায় নামব বা নামবো না তাই নিয়ে রাজনীতি করার কোনো মানেই হয় না। যারা বলছে বকুল, যেভাবে হোক একটা এনগেজমেন্ট নিয়ে দরকার সকলেরই। সেটা বিতর্ক হলে হোক। আমার শুধু ভয় হচ্ছে যে আমরা হয়তো কোনো উত্তরই পাব না। কিন্তু তবুও আশা করছি, চোখ রেখেছি খবরে।’
অরিজিতের মতে, বড্ড ভয় ধরাচ্ছে ভাবাচ্ছে বিষয়টা। কাজের মাঝে থাকলেও ঘুরে ফিরে ভাবনাটা চলেই আসছে। এর পর নিজের শরীরের কথা বলতে গিয়ে বলেন, কিছুদিন আগেই কনসার্ট বাতিল হয়েছিল। এখন গলা আগের থেকে একটু ভালো। তবে পুরো গান এখনও গাইতে পারছেন না তিনি। এরপর ফের প্রসঙ্গে ফিরে বলেন, রাস্তায় নেমেই প্রতিবাদ করতে হবে তেমনটা নয়। নেমে গন্ডগোল যেন না হয়, এতে হিতে বিপরীত যেন না হয়।
পথের নামার প্রসঙ্গে অরিজিৎ জানান, দশ পনেরো বছর আগে হলে এতটা ভাবতে হত না। এখন অনেকটা ভেবেচিন্তে কাজ করতে হয়। তোমরা যেভাবে রাস্তায় নামতে পারো আমি সেভাবে পারি না। তোমরা স্বাধীন হলেও আমার সেই স্বাধীনতা নেই। বেরোতে হয় ঠিকই কিন্তু স্বাধীন বিচরণ করতে পারি না বা বলা ভালো করতে দেওয়া হয় না। রাস্তায় বেরোলেই সেলফি ট্রলার ভিড় জমে যায়, যেমনটা কনসার্টেও দেখেছি বহুবার।
আরও পড়ুনঃ রাতের শহরে চলবে আরও ২৫০ বাস! জনগনের স্বার্থে বড় ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের, দেখুন রুটগুলি
এদিন নিজের ভয় প্রকাশ করে গায়ক বলেন, ‘এই প্রথমবার এক্সপ্রেস করতে বাধ্য হচ্ছি, ভয় পেয়েছি, ভিতর থেকে একেপে গিয়েছি। এর আগেও অনেক ঘটনা ঘটেছে, ভেতর থেকে কেঁপেছি কিন্তু কোনো বিষয়ে পুরো না জেনে কিছুই বলতে চাই না। কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ নয়। যে লংকায় যায় সেই রাবণ হয়ে যায়। আমরা যে প্রশ্ন করা শুরু করেছি সেটা থাকুক। বিশ্বাস ভাঙলে এভাবেই প্রতিক্রিয়া দাবী মানুষ, সেটা বুঝতে হবে। এখন একজন নেতাজি বা স্বামী বিবেকানন্দ এলে সত্যিই ভালো হত। শুধু ওই বাবা মায়ের কথাটা ভেবে বুক ফেটে যাচ্ছে, এরকম কত মা-বাবা আছেন। আরও কত কেমন ঘটনা আছে!’
গোটা ঘটনা নিয়ে একটা গানও বেঁধেছেন অরিজিৎ সিং। গিটার হাতে সেই গানও শুনিয়েছেন সকলকে। ‘আর কবে, আর কবে, আর কবে…. চিত্ত স্বাধীন হবে?’ তবে সব শেষে জানিয়েছেন সাবধানে থেকো আমাদের মাথা ঠান্ডা করে কাজ করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে এটা এক দুদিনের বিষয় নয়। দেবীপক্ষের বিচার চাই দেবীর।