‘দিব্যা ভারতী’ নামটা শুনলেই মানসচক্ষে ভেসে ওঠে একমাথা কোঁকড়ানো চুল, হাসি হাসি মুখে মিষ্টি একটা মেয়ে। এ যেন কোনো বার্বি দুনিয়ার বার্বি ডল। কে বলবে যে একটা সময় মাত্র ১৯ বছর বয়সেই গোটা ভারত কাঁপিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঐ যে কথায় আছে না যে, বেশি সুখ সবার কপালে সয়না। মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাঁচতলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর।
সম্প্রতি প্রয়াত নায়িকার স্মৃতিচারণায় মত্ত হলেন তাঁরই এক সহ অভিনেত্রী আয়শা ঝুলকা। অভিনেত্রীর মনে পড়ে যায় যায় সহকর্মী দিব্যা ভারতীকে। মৃত্যুর আগে অবদিও একসঙ্গে কাজ করেছেন দুজনে। এমনকি সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার ‘ওয়ক্ত হমারা হ্যায়’ (১৯৯৩) ছবিতে আয়েশাকে অভিনয়ের জন্য রাজি করিয়েছিলেন দিব্যাই।
পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে যায় আয়েশার। কীভাবে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পালালো মেয়েটা! ভাবলেই অবাক লাগে তার। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে আয়েশা জানান, দিব্যার মৃত্যুর খবর তাকে ‘অসাড়’ করে দিয়েছিল। খবরটা যখন পেয়েছিলেন তখন ‘রং’ (১৯৯৩) ছবির ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু এই খবরে এতোটাই মুসড়ে পড়েছিলেন যে বারংবার টেক বাতিল করতে হয়েছিলো তাকে।
আয়েশার কথায়, “আমরা শিশুসুলভ ছিলাম। ছোটখাটো সমস্যা লেগেই থাকত আমাদের মধ্যে। বিড়াল-কুকুরের মতো ঝামেলা করতাম। কাজও করতাম চুটিয়ে। আমাদের রসায়ন ছিল অন্য মাত্রার। আমি দিব্যাকে খুব পছন্দ করতাম। আর দিব্যা বলত, ‘আমি তোমার প্রেমে পড়েছি।’ আমরা প্রতিবেশীও ছিলাম। যোগাযোগ ছিল নিজেদের মধ্যে। ‘রং’ ছবিতে আমরা দুই বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছি।”
পাশাপাশি আয়েশা জানান, মহাবালেশ্বরে তার ছবির সেটে মাঝে মধ্যে হানা দিতেন দিব্যা। তাকে টিপ পরিয়ে সাজাতেন, মাঝে মাঝেই নিয়ে আসতেন জুতো জামা। আজও তার বাড়ির আনাচে কানাচে রয়েছে প্রয়াত অভিনেত্রীর স্মৃতি। অভিনেত্রীর কথায়, মাঝেমধ্যেই ঠেলে কান্না বেরিয়ে আসতে চায়। কিন্তু এই দীর্ঘ কয়েক দশকে সব যেন জমে পাথর হয়ে গেছে।
আয়েশার কথা বললে, সাল ১৯৯০-তে ‘কুরবান’ ছবির হাত ধরে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অভিনেত্রী। তারপর একের পর এক ‘খিলাড়ি’ এবং ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’ (১৯৯২), ‘চাচি ৪২০’ (১৯৯৭), ‘হিম্মতওয়ালা’ (১৯৯৮), ‘রান’ (২০০৪), ‘সোচা না থা’ (২০০৫)-র মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। আসন্ন কাজের কথা বললে, খুব শীঘ্রই ‘হুশ হুশ’ ওয়েব সিরিজে দেখা যাবে তাকে।