আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে তুলসী (Basil) গাছ থাকে। সকাল-সন্ধ্যা মা, দিদিরা তুলসী গাছে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো করেন। কথায় আছে, তুলসী মাকে পুজো করলে ৩৩ কোটি দেবতার পুজো করা হয়ে যায়। বাড়িতে তুলসী গাছ রাখা অত্যন্ত শুভ। এটি মানুষের জীবনে ভাল ফলদায়ক হয়। শুধু ধর্মের দিক থেকেই তুলসী গাছ যে শুভ তা কিন্তু নয়। তুলসী গাছ দিয়ে আপনি জীবনে লক্ষ্মীও আনতে পারেন। এমনকি হয়ে যেতে পারেন লাখপতিও।
তাহলে পুরো বিষয়টা খুলেই বলা যাক। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছের চাষ করার জন্য প্রচার শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, আয়ুষমন্ত্রক আগামী বছরের মধ্যে ৭৫ লক্ষ বাড়িতে ঔষধি গাছ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর ভারতের অন্যতম ঔষধি গাছ হলো তুলসী। এই গাছের চাষ বিপুল পরিমাণে শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলায় একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে ৯০% চাষী তুলসী চাষ করে অর্থ উপার্জন করে থাকেন।
এই গ্রামের মোট জনসংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। তিন বছর আগে সেখানকার বেশকিছু কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে তুলসী চাষ শুরু করেন। আর প্রথমবারেই বিপুল লাভ করেন তারা। এরপর থেকে বাকিরা তাদের দেখে তুলসী গাছ চাষ করার শুরু করেন। এ প্রসঙ্গে সেখানকার এক চাষী জানিয়েছেন যে ১০ বিঘা জমি চাষ করতে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রত্যেক বিঘায় দেড় থেকে ২ কুইন্টাল ফলন পাওয়া যায়।
‘অর্গানিক ইন্ডিয়া’ নামের একটি কোম্পানি রয়েছে যারা সেখানকার কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টাল তুলসী ১০ হাজার টাকা দরে কিনে নেয়। এর ফলে তারা ভালো লাভ পাচ্ছেন। কিভাবে করা যেতে পারে এই তুলসী চাষ? বেলে, দোআঁশ মাটি তুলসী চাষের জন্য সবচেয়ে উপকারী।
প্রথমত, জুন থেকে জুলাই মাসে এখানে বীজের মাধ্যমে নার্সারি তৈরি করা হয়। এরপর এগুলি প্রতিস্থাপন করে রোপনের সময় প্রতিটি লাইনের দূরত্ব রাখা হয় ৬০ সেন্টিমিটার এবং প্রত্যেকটি গাছের দূরত্ব থাকে ৩০ সেন্টিমিটার। ১০০ দিন পরই এই গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। তবে এই চাষের ক্ষেত্রে গাছের খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না। আর এখানে খুব কম খরচে বেশি লাভ করা যায়। তুলসী ওষুধ তৈরিতে ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।