অনির্বাণ ভট্টাচার্য, বাংলা সিনেমার একজন নামী অভিনেতা তিনি। থিয়েটারের প্রতি রয়েছে গভীর টান আর এই টানের জন্যই মেদিনীপুর থেকে কলকাতা এসেছিলেন তিনি। তারপরে অভিনয়ের সুযোগ পেতে সে সুযোগ হাতছাড়া করেননি অনির্বাণ। নিজের অসাধারণ অভিনয় গুণের দ্বারা দর্শকদের মধ্যে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। অভিনেতার ফ্যান ফলোইং সংখ্যা নেহাত কম নয়। এর সাথে অগণিত মহিলার হার্টথ্রব তিনি। তার মিষ্টি হাসি এবং চেহারা দেখে ক্রাশ খায় মহিলারা। আজ গোটা বাংলার ক্রাশ অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তার সম্পর্কে আপনাদেরকে কিছু কথা এই প্রতিবেদনে জানাবো।
১৯৮৬ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তার। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনার পর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিনয় নিয়ে পড়াশোনা করেন। গ্রাজুয়েশনের পর মাস্টার্স করেন অভিনয় নিয়ে। ২০০৯ সালে ভারত সরকারের থেকেই ইয়ং আর্টিস্ট স্কলার্শিপ পেয়েছিলেন। এই কলেজে পড়তে পড়তে থিয়েটারে কাজ শুরু করেন অনির্বাণ। বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এন্টনি সৌদামিনী, বিসর্জন, দেবী সর্বমস্তা এরকম বহু নাটকে অভিনয় দিয়ে তার অভিনয় জীবনের যাত্রা শুরু।
২০১০ সালে অনির্বাণ সংগ্রাম হাতিবাগান নামের একটি নিজস্ব থিয়েটার গ্রুপ তৈরি করেন। সেখানে তিনি নিজেই নাটকের পরিচালনা করতেন। ঠিক এই সময়ে তিনি জি বাংলা টেলিফিল্ম ‘কাদের কুলের বউ’-তে অভিনয় করার সুযোগ পান। এই ছবিতে তার অভিনয় এর পরে ‘যদি বলো হ্যাঁ’, ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’ এই টেলিফিল্মগুলিতে পরপর অভিনয় করেন তিনি। সেই সময় শাশ্বত চ্যাটার্জির সঙ্গে ”অপুর সংসার নামের একটি টকশো-তে কাজ করতেন অনির্বাণ। কালার্স বাংলা থেকে স্টার জলসা সব জায়গাতেই কাজ করেছেন তিনি।
সিনেমার পর্দাতে প্রথম ব্রেক পান অপর্ণা সেনের ছবি আরশিনগরের এটি পার্শ্ব চরিত্রে। এই ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের মনে দাগ কেটে দেন। এরপরে ২০১৬ সালে শাশ্বত চ্যাটার্জির ‘ঈগলের চোখ’ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের মনে জায়গা করতে শুরু করেন অনির্বাণ। এই ছবি তাকে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড এনে দেয়। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। কলকাতায় কলম্বাস, দুর্গা সহায়, ধনঞ্জয়, আলিনগরের গোলকধাঁধা, গুমনামী থেকে উমা সব ছবিতে দাপিয়ে অভিনয় করেন অভিনেতা। নায়ক না হলেও তিনি যে খাঁটি অভিনেতা সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।
হইচইয়ের ব্যোমকেশ ওয়েব সিরিজ তাকে তার কেরিয়ারের বিশেষ সাফল্য আনে। তিনি খুব ভালো গাইতেও পারেন। সৃজিত মুখার্জীর শাহজাহান রিজেন্সিতে ‘কিচ্ছু চাইনি আমি’ গানটি গেয়ে তিনি আরও বেশি জনপ্রিয় হন। ২০২০ তে তার অভিনীত ড্রাকুলা স্যার এ অন্য রকম চরিত্রে ফের বুঝিয়ে দেন যে অভিনয় কাকে বলে! এই ছবিতেও প্রিয়তমা গানটি তার গাওয়া। এর সাথেই গতবছর ‘মন্দার’ এই ওয়েব সিরিজ পরিচালনা করেন তিনি। যা প্রশংসিত করেন দর্শক থেকে সমালোচক পর্যন্ত। যদিও এই অভিনেতার বিয়ের পর তার স্ত্রীকে নিয়ে বারবার সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু তিনি সেইসব কিছুতে মাথা ঘামান না। বরং কাজ নিয়ে বেশি ভালো থাকতে পছন্দ করেন বাংলার ক্রাশ।