শিয়ালদহ স্টেশন (Sealdah Station), হল কলকাতার অন্যতম প্রধান ও ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন। এবার নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের জেরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এই শিয়ালদহ স্টেশন। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদলে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
শিয়ালদহের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব
সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের উপস্থিতিতে কলকাতায় এক রেল অনুষ্ঠানে শমীক ভট্টাচার্য এই প্রস্তাব রাখেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, শিয়ালদহ স্টেশন উদ্বাস্তুদের সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত, কারণ দেশভাগের পরে এই স্টেশনটি লক্ষাধিক উদ্বাস্তু মানুষের যাত্রার সাক্ষী থেকেছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলার উন্নয়ন ও উদ্বাস্তুদের জন্য লড়াইয়ের অন্যতম নেতা। তাই শিয়ালদহ স্টেশন তাঁর নামে করা উচিত বলে তিনি প্রস্তাব রাখেন।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
শমীক ভট্টাচার্যের এই প্রস্তাব ঘিরে বিরোধী দলগুলির মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “নাম পরিবর্তনের চেয়ে যাত্রী সুরক্ষা ও রেল পরিষেবা উন্নত করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি নাম বদলানোর কথা আসে, তাহলে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম স্বামী বিবেকানন্দের নামে করা উচিত, কারণ তিনি শিকাগো ধর্ম মহাসভা থেকে ফেরার পর তিনি এখানেই নেমেছিলেন।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “শ্যামাপ্রসাদের নামে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা এর বিরোধিতা করব।”
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের বক্তব্য
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই প্রসঙ্গে বলেন, “ইউপিএ আমলের তুলনায় বর্তমান সরকার পশ্চিমবঙ্গে রেল প্রকল্পগুলির জন্য অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দ করেছে। গত ১০ বছরে বিজেপি সরকার রাজ্যের রেল প্রকল্পগুলিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এমনকি কেন্দ্রের তরফ থেকে আরও ৬১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।”
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের কুণাল ঘোষ দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু হয়েছিল। বর্তমান সরকার সেই প্রকল্পগুলি শেষ না করেই নতুন প্রস্তাব আনছে। আসলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন রেলমন্ত্রী।” তবে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক এখন কিছু দিন চলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।