পার্থ মান্নাঃ কলকাতা হাইকোর্ট সোমবার চিকিৎসকদের প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ শুনানি করেছে। আদালতের বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজ বলেছেন, “পূজার সময় লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় আসে, তাহলে প্রতিবাদ জানাতে হলে সরকারের কী সমস্যা?” বিচারপতি এই প্রসঙ্গে আরও যোগ করেন যে, “পূজার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার মতো, প্রতিবাদ মিছিলের জন্যও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা উচিত।”
প্রতিবাদের অনুমতি দিল হাইকোর্ট
শুনানিতে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে কলেজ স্কোয়ার থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত মার্চের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইসাথে এই মার্চের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। তবে আদালতের নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, মার্চে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক থাকতে হবে।
সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা
মার্চের অনুমতির বিষয়ে সরকার থেকে জানানো হয়েছে যে, কতজন মানুষ এতে অংশ নেবেন তা পরিষ্কার করা উচিত। এর উত্তরে চিকিৎসকদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা আমাদের সদস্যদের সংখ্যা জানাতে পারব, তবে সাধারণ মানুষ যদি এতে যোগ দেন, তাহলে তাদের সংখ্যা আমরা কীভাবে জানাব?” এর পর বিচারপতি বলেন, “এটা একটি সাংবিধানিক অধিকার। যদি ১০ লাখ সাধারণ নাগরিক শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে চান, তাহলে তাদের সেই অধিকারটি কি খর্ব করা হবে?”
প্রতিবাদের চেহারা
বিচারপতি তাদের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বলেন, “যারা দুর্গাপুজো উদযাপন করেন, তারা জানেন না কতজন দর্শক আসবে। পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবকরা কত ভালোভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। দুর্গাপুজোর সময় যেভাবে লাখ লাখ মানুষের ভিড় পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনই এই প্রতিবাদ মিছিলকেও নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।”
এছাড়া আদালত সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছে, “যদি পুরো শহরে ধারা ১৪৪ কার্যকর হয়, তাহলে কোথাও মিছিল বা সভা হবে না।” কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশটি রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলছে, যেখানে নাগরিকদের সংবিধানিক অধিকার এবং নিরাপত্তার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে’।
এদিনের শুনানি থেকে এটা স্পষ্ট যে, কলকাতা হাইকোর্ট চিকিৎসকদের প্রতিবাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাছাড়া সরকারের উচিত সঠিকভাবে নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করা।