নিউজশর্ট ডেস্কঃ সকলেই জানেন দুধের রং সাদা (White Milk)। পুষ্টি নিরিখে এগিয়েও রয়েছে এই সাদা রংয়ের দুধ। আট থেকে আশি সকলকেই পুষ্টির জন্য এই সাদা দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সকালে উঠে চা-কফির সঙ্গে হোক অথবা ‘স্বাস্থ্যকর’ পানীয়ের সঙ্গে, অধিকাংশেরই নিত্য দিনের সঙ্গী দুধ। কোনও জিনিসের পরিচ্ছন্নতার মাপকাঠি বোঝাতেও দুধসাদা রঙের সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু পৃথিবীতে কালো রঙেরও দুধ পাওয়া যায়।
দুধে আছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন ১২, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি হাড়-দাঁত মজবুত করে। ঠান্ডা দুধ খেলে পাকস্থলির গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড স্থিতিশীল হয়ে আসে। দুধে ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা পাকস্থলীতে অ্যাসিড তৈরি প্রতিরোধ করে। কিন্তু সেই দুধের রংই যদি হয় কালো? অবাক হওয়ার কিছু নেই, এমন দুধ পাওয়া যায়। তবে এই দুধের রহস্য তুলে ধরবো এই প্রতিবেদনে।
কোন প্রাণী দেয় কালো দুধ জানেন?
গরু অথবা ছাগল নয়, তবে চারপেয়ে এমন এক প্রাণী রয়েছে, যাদের থেকে কালো রঙের দুধ পাওয়া যায়। সন্তান প্রসবের পরেই কালো রঙের এই তরল তার শরীর থেকে নিঃসৃত হয়। আফ্রিকায় এক বিশেষ ধরনের গন্ডার পাওয়া যায়, যার গায়ের রং কুচকুচে কালো।
এই কালো গন্ডারের বিজ্ঞানসম্মত নাম ডাইসেরস বাইকর্নিস। কালো স্ত্রী গন্ডারের শরীর থেকেই কালো রঙের দুধের নিঃসরণ হয়। তবে উপাদানের নিরিখে সাদা দুধের সঙ্গে কালো দুধের বিস্তর ফারাক রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লন্ডন অতীত, এবার পুজোয় দুয়ারে ‘লস ভেগাস’! ’11D Sphere’ থিম প্যান্ডেল বানাচ্ছে এই পুজো কমিটি
কেন এই দুধের রং কালো হয়?
গবেষণা করে জানা গিয়েছে, কালো স্ত্রী গন্ডারের শরীর থেকে যে দুধ পাওয়া যায় তাতে জলের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। ফলে সাদা দুধের চেয়ে এর ঘনত্ব অনেকটাই কম। শুধু ঘনত্বের দিক থেকেই নয়, কালো দুধে ফ্যাটের পরিমাণও অত্যন্ত কম। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এই দুধে ফ্যাটের পরিমাণ ০.২ শতাংশ।
২০১৩ সালের একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, কালো দুধের ঘনত্ব কম হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে কালো স্ত্রী গন্ডারের ধীর গতির প্রজননচক্র।সাধারণত জন্মের পর চার থেকে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হলে কালো স্ত্রী গন্ডারেরা সন্তান প্রসবে সক্ষম হতে পারে। সাধারণত সন্তান প্রসবের পর দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্তান পালন করে তারা। এক বারে একটি মাত্র সন্তানেরই জন্ম দিতে পারে তারা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শুধু সন্তানধারণের জন্যই নয়, সন্তান পালনের ক্ষেত্রেও বেশি সময় লাগে কালো স্ত্রী গন্ডারের।
তাছাড়া সন্তান প্রসবের পর থেকেই কালো রঙের দুধ সন্তানকে পান করানো শুরু করে কালো স্ত্রী গন্ডার। দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে সেই দুধ নিঃসৃত হতে থাকে। গবেষকদের একাংশের দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে কালো স্ত্রী গন্ডারের শরীর থেকে দুধ বার হওয়ার কারণে পুষ্টিগত দিক থেকে তা উন্নত নয়। সে কারণেই কালো রঙের দুধে ফ্যাট এবং প্রোটিনের পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।