ভারতে প্রচুর পরিমাণে মশলার চাষ করা হয়। যেকোনো রান্নাকে সুস্বাদু বানাতে মশলার জুড়ি মেলা ভার। এখন দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে মশলা উৎপাদন করা হচ্ছে। এর কারণ হলো কৃষকরা যাতে অল্প সময়ের মধ্যে বেশি লাভের সুযোগ পান। আর এমনই এক লাভজনক মশলা হল লবঙ্গ চাষ। আপনি যদি একজন কৃষক হন তাহলে লবঙ্গের চাষ করে বেশ ভাল টাকা উপার্জন করতে পারেন।
এই ফসল ফলানোর জন্য ব্যবহার করা হয় বেলে মাটির। যেখানে সেচের জন্য খুব কম জল প্রয়োজন। জানা যায়, একটি লবঙ্গ গাছ একবার লাগানো হলে প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তবে এর জন্য সঠিক যত্নের প্রয়োজন হয়। ২৫° C থেকে ৩২° C তাপমাত্রা লবঙ্গ চাষের জন্য উপযুক্ত। কারণ হলো এই গাছ কখনোই ঠান্ডা বা আদ্র জলবায়ুতে জন্মায় না। বাজার থেকে এই গাছের বীজ কিনে এনে বীজ বপনের আগে রাতে আর ৮ থেকে ১০ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
এরপর ক্ষেতের মাটিতে জৈব সার যোগ করে বীজ বপনের জন্য তৈরি করতে হবে। মনে রাখতে হবে এই বীজ অঙ্কুরিত হতে ১-২ মাস সময় লাগবে। আর পরিপক্ক হতে সময় লাগবে ২-৩ বছর। এরপরে এই গাছে ফুল ফোটা শুরু হয় এবং ৫ বছর পর এই ফল উৎপাদন শুরু করে। এই ফলগুলোকে গাছ থেকে তুলে রোদে শুকানো হয় এরপরে হাত দিয়ে ঘষলে উপরের চামড়া উঠে এসে বাদামী রঙের লবঙ্গ পাওয়া যায়।
এটাও মনে রাখতে হবে, লবঙ্গ ক্ষেতে জল নিষ্কাশন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ক্ষেতে জল থাকলে গাছপালা পচে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। এই লবঙ্গ ক্ষেতে প্রতি ৩-৪ বছর অন্তর জৈব সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। ভারতের বাজারে লবঙ্গের চাহিদা অনেক বেশি। আর এই কারণে লবঙ্গ চাষীরা লাভজনক ব্যবসা করতে পারেন। লবঙ্গ শুধু একটি মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয় না, এটি টুথপেস্ট গরম মশলা ইত্যাদি সহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। এখন এক কেজি লবঙ্গের দাম প্রায় ৯০০ থেকে হাজার টাকা। প্রত্যেক মৌসুমে ৫০ কেজি লবঙ্গ চাষ করলে তা থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যেতে পারে।