মানুষ এখন নিজেদের সুযোগ সুবিধার জন্য বাড়ির আশেপাশে থাকা গাছপালাকে নির্বিচারে কেটে ফেলছেন। এর ফলে মানুষ নিজেরাই প্রকৃতির বিরাট ক্ষতি করছে। পৃথিবীতে বিশ্ব উষ্ণায়নের সৃষ্টি হচ্ছে, যেটার জন্য এই গাছ কেটে ফেলা ও একটা কারণ। তবে আজকে আমরা এমন এক পরিবারের কথা বলব যারা তাদের জমির মাঝখানে গাছ না কেটে তার চারপাশ দিয়ে বাড়ি তৈরি করেছেন।
এতে গাছের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি । এটি মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে কেশরওয়ানি পরিবারের ঘটনা। এইবারের কাহিনী শুধু সেই এলাকার মানুষজন নয় বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে। এই বাড়ির কর্তা যোগেশ কেশরওয়ানী ও তার স্ত্রী নীলু কেশরওয়াণী বলেছেন যে এই বাড়িটি তাদের প্রয়াত ডক্টর মতিলাল কেশরওয়ানি তৈরি করেছিলেন। তখন এই জায়গায় টালির ঘর ছিল।
সেই সময় পিপল গাছটি সম্ভবত উঠেছিল। এই গাছের বয়স প্রায় দেড়শ বছরের বেশি। ১৯৯০ সালে যখন যোগেশের বাবা নতুন বাড়ি তৈরি করছিলেন তখন আশেপাশের লোকেরা এই গাছটি কেটে সুন্দর বাড়ি তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি গাছ কাটতে চাননি, সেই সময় তিনি তার এক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুর সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেন।
সেখানে গাছ মাঝখানে রেখে একটি মজবুত বাড়ি তৈরি করা হয়। আর সেই বন্ধু মজবুত বাড়ি তৈরি করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। এখানে বাড়িটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেখানে ঘর থেকে কিছু গাছের ডাল বেরিয়ে আসছে। এই বাড়িটি চার তলা। পিপল গাছ খুব দ্রুত ছড়ায়, তাই ডালপালা বেরিয়ে আসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘরের যেন কোনো ক্ষতি না হয় এমন ভাবে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।
এই বাড়ি সম্পর্কে যোগেশ বাবু বলেন, “আমাদের বাড়ির এই একটি গাছের কারণে প্রকৃতির সাথে আমাদের সবসময়ই সম্পর্ক ছিল। আমাদের পারিবারিক ব্যবসার পাশাপাশি আমরা জৈব চাষের সাথেও জড়িত। আমরা আমাদের বাড়ির জন্য সবজি এবং ফল নিজেরাই চাষ করি। আমাদের বাগানে প্রায় ৫০-৬০টি ফলের গাছ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে জামুন, পেঁপে, আম ইত্যাদি। আমরা আমার বাবার সাথে এই সমস্ত গাছ লাগিয়েছিলাম এবং আজ আমরা তাদের ফল খাচ্ছি। এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে!”