ঘন্টাখানেক আগেও যে মানুষটা মঞ্চ কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, নিজের সুরের জাদুতে হিন্দোল তুলছিলেন অনুরাগীদের মনে সেই মানুষটাই নিথর অবস্থায় আজ হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতটা দুঃস্বপ্নের মতোই কেটেছে সঙ্গীতপ্রেমীদের। মানুষকে অসংখ্য মেলোডি উপহার দিয়ে মঙ্গলবার রাত্রে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী “কৃষ্ণকুমার কুনাথ” পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে। অনুরাগীদের জন্য রেখে গেছেন তার অসাধারণ সব গান এবং কিছু স্মৃতি।
২০০৮ সালে তার এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, একটা সময় ছিলো যখন তার কাছে বিভিন্ন বিয়ে বাড়িতে গান গাওয়ার প্রস্তাব আসতো। সেই সময় এই গানের জাদুকর নিজের মুখেই জানিয়েছিলেন,‘হ্যাঁ আমাকে ১ কোটি টাকা দেওয়া হলেও আমি কখনও বিয়ে বাড়িতে গাইব না।’ এর সাথে সাথে তিনি কখনও অভিনয় জগতে পা রাখতে চান কি না জানতে চাওয়া হলে বলেন, ‘ওহ প্লিজ! আমি অভিনয় করব না। কিছু বছর আগে অফার এসেছিল, সাথে সাথে না করে দিয়েছি।’
গত মঙ্গলবার রাত্রে কলকাতার নজরুল মঞ্চে লাইভ অনুষ্ঠান কলকাতার নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের মঞ্চে গান গাইছিলেন কে কে। “কে কে” কলকাতায় আসছে শুনতেই জনতার ঢল নেমেছিলো রাস্তায়। অনুরাগীদের উন্মাদনা ছিলো দেখার মতো। “কে কে” নজরুল মঞ্চে পা রাখার পরে জনতার ভিড় এতো বেড়ে যায় যে, পুলিশ ফোর্স নামাতে হয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। বলাই বাহুল্য স্টেডিয়ামের ভেতরের অবস্থাও ছিলো তাই।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬টা ৪৫ এ মঞ্চে ওঠেন তিনি। মঞ্চে ওঠার পর থেকেই শারিরীক অসুস্থতা বোধ করছিলেন তিনি। শারীরিক অস্বস্তির সঙ্গে বার বার ঘাম হচ্ছিল তার। গানের ফাঁকে ফাঁকে স্টেজের পিছনে গিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কিন্তু নিজের অনুরাগীদের নিরাশ করতে চাননি তিনি, ঐ অবস্থাতেই নিজের উপস্থাপনায় উন্মাদনা ছড়ান স্টেডিয়ামে। এরপর ৯ টা নাগাদ স্টেজ ছাড়েন গায়ক। গ্র্যান্ডে ফিরে নিজের অস্বস্তির কথা জানান তিনি। হোটেল থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, রুমে পৌঁছেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। হাসপাতালেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
মিডিয়া সূত্রে খবর, বুধবার “কেকে”র ছেলে ও স্ত্রী আসছেন কলকাতা। অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণে প্রথমে ময়নাতদন্ত সম্পূর্ণ করেই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁর দেহ।