নিউজশর্ট ডেস্কঃ- দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি মানুষেরই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস হল ওষুধ। অনেক ধরনের শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। আর সেই ওষুধ দোকান থেকে কেনার সময় ওষুধের গায়ে লেখা মেয়াদের দিকে সকলেই নজর দেন। সাধারণত মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খান না কেউই। বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন ওষুধের মেয়াদ শেষ হবার পর ওষুধ বিষ হয়ে যায় এবং তা খেলে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু এর কি আদতে কোন সত্যতা রয়েছে?
মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ খাওয়া যায় না কেন?
অনেকেই মেয়াদ শেষ হওয়া ওষুধ খাওয়া নিয়ে অনেক ধারনা রয়েছে। তবে ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার অর্থ কী তা সবার আগে জানা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে কোনও ওষুধ কিনুন না কেন, তাতে দুটি লেখা স্পষ্ট দেখতে পাবেন। প্রথমটি হল সেটি উৎপাদনের তারিখ। অর্থাৎ যে তারিখে ওই ওষুধটি তৈরি করা হয়েছিল। আর পাবেন ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ। অর্থাৎ যে তারিখের পরে ওই ওষুধের প্রভাবের গ্যারান্টি প্রস্তুকারক কোম্পানি গ্রহণ করবে না।
এছাড়াও বেশিরভাগ ওষুধে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। সকল রাসায়নিক পদার্থের বিশেষত্ব হল, সময়ের সাথে সাথে তাদের প্রভাব পরিবর্তিত হয়। ওষুধের ক্ষেত্রেও তাই হয়। বাতাস, আর্দ্রতা, তাপ ইত্যাদির কারণে অনেক সময় ওষুধের কার্যকারিতা সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এই কারণে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। সেজন্য সব ওষুধ কোম্পানি তাদের পণ্যের উপর একটি নির্দিষ্ট তারিখ লিখে দেয়। যাতে যে কোনো আইনি ঝামেলা এড়ানো যায়।
মার্কিন চিকিৎসা সংস্থা AMA ২০০১ সালে একটি তদন্ত পরিচালনা করে। ২২টি ভিন্ন ওষুধের ৩০০০ ব্যাচ নেওয়া হয়। সেগুলি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে, AMA প্রায় ৮৮% ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের পরও প্রায় ৬৬ মাস বাড়িয়ে দেয়। এর মানে, বেশিরভাগ ওষুধের কাজ করার ক্ষমতা তাদের উপর মুদ্রিত মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের চেয়ে অনেক বেশি। যে ওষুধগুলির মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ AMA দ্বারা বাড়ানো হয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে অ্যামোক্সিসিলিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, মরফিন সালফেট ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ লাইনে দাঁড়িয়ে পাশবই আপডেট অতীত! এই ৬টি উপায়ে বাড়ি বসেই জানা যাবে SBI অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে কোন ওষুধ একেবারেই খাওয়া যায় না?
যদিও এই বিষয়ে তেমন কিছু জানা না গেলেও, চিকিৎসক মহল সূত্রে খবর, কোনো ওষুধ যদি ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকারে হয়, তাহলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এর প্রভাব আরও অনেক দিন থাকবে। কিন্তু সিরাপ, চোখের ড্রপ এবং ইনজেকশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ব্যবহার করা উচিত নয়।
মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা প্রস্তাবিত কিছু ওষুধ রয়েছে যা তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ব্যবহার করা উচিত নয়। এই ওষুধগুলি হল: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওষুধ। সেগুলি মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নষ্ট হতে শুরু করে। বুকে ব্যথা হলে হৃদরোগীদের যে ওষুধ দেওয়া হয়, সেটিও খোলার সাথে সাথে প্রভাব খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রক্ত, ভ্যাকসিনের মতো ওষুধগুলি নির্ধারিত সময়ের পরে কখনই ব্যবহার করা উচিত নয় বলেই মত চিকিৎসকদের।