পার্থ মান্নাঃ কৃষকদের সাহায্যার্থে সরকারের তরফ থেকে নির্দিষ্ট দামে বা মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইসে (MSP) ফসল কেনা হয়। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ এই ব্যবস্থা নিয়ে নানা অভিযোগ আসছিল। সহায়ক মূল্য দিয়ে ধান কেনা বেচার ক্ষেত্রে ওজনের গন্ডগোল নিয়ে অভিযোগ জমপুরেছিল খাদ্য দফতরের কাছেও। তাই এবার কড়া হাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
ধান কেনা-বেচার দুর্নীতি রুখতে পদক্ষেপ প্রশাসনের
শেষ কয়েক বছরে রাজ্যে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে ভুয়া রেশন কার্ড, চাল ডাল চুরি থেকে কয়লা পাচারের মত দুর্নীতি সকলের সামনে এসেছে। কোটি কোটি টাকার চুরি প্রকাশ্যে আসতেই শিরোনাম হয়েছে। এরপর রাজ্যের সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় বিক্রয় নিয়ে দুর্নীতির খবর আসতেই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। তাই এবার প্রতিটি ধান ক্রয় ও বিক্রিয় বিক্রিয় কেন্দ্রে CCTV ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেওয়া হল সরকারের তরফ থেকে।
চাষিদের জন্য নতুন ভাতা
অবশ্য শুধুমাত্র দুর্নীতি দমন নয়, সাথে চাষিভাইদের জন্য নতুন উদ্যোগনেওয়া হয়েছে। একদিকে যেমন সিসিটিভি নজরদারির মাধ্যমে ধান বিক্রি বা কেনার ক্ষেত্রে ওজনের কারচুপির উপর নজর রাখা হবে। তেমনি চাষিদের আর্থিক উন্নতির কথা ভেবে নতুন করে উৎসাহ ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা হতে চলেছে। কি এই উৎসাহ ভাতা, কত টাকা মিলবে? জানা যাচ্ছে চাষিরা যদি সরকারি সংস্থায় নিজেদের ধান বিক্রি করেন তাহলে প্রতি কুইন্টালের জন্য অতিরিক্ত ২০ টাকা করে দেওয়া হবে।
এখানেও শেষ নয়, গতবছরের তুলনায় এবছরের ধানের সহায়ক মূল্যও বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে প্রতি কুইন্টালের জন্য ২১৮৩ টাকা পাওয়া যেত সেখানে এবছর ২৩০০ টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ সরকারি সংস্থায় ধান বিক্রি করলে চাষিরা ২৩২০ টাকা প্রতি কুইন্টাল হিসাবে দাম পেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে সমস্ত চাষিরা ই-প্যাডি পোর্টালে নিজেদের রেজিস্টার করিয়েছেন শুধুমাত্র তাদের থেকেই ধান কেনা হবে।
প্রসঙ্গত, এবছর খরিফ মরশুমে মোট ৬৮ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। এতদিন বেনফেড, কনফেড ও নাফেড এর মাধ্যমে ধানকেনা হত। তবে এবছর খাদ্য দফতর আরও দুটি সংস্থা WBECSC ও BPAMCL এর দ্বারাও ধান কিনবে। সব মিলিয়ে সহায়ক মূল্যবৃদ্ধি থেকে অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার মাধ্যমে কৃষকদের আর্থিক উন্নতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।