নিউজ শর্ট ডেস্ক: ভোজনরসিক বাঙালির খাবারের শেষ পাতে মিষ্টি থাকা মাস্ট। মিষ্টির প্রতি বাঙালির দুর্বলতা আজকের নয়। বাংলার মিষ্টির খ্যাতি রয়েছে জগৎজোড়া। রসগোল্লা,পান্তুয়া,জলভরা, ল্যাংচা,রসমালাই,সীতাভোগ,সরপুরিয়া কি নেই বাঙালির এই মিষ্টির খাজনায়! আসলে বাঙালির প্রিয় মিষ্টির তালিকায় এত মিষ্টি রয়েছে যা গুনে ও শেষ করা যাবে না.
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পা রাখার সাথে সাথেই বদলাতে শুরু করে সেখানকার মিষ্টির তালিকা। আমাদের রাজ্যের প্রতিটি রাজ্যে বিখ্যাত এক এক ধরনের মিষ্টি। আসুন জানা যাক, বাংলার কোন জেলার কোন মিষ্টি বিখ্যাত?
কলকাতার রসগোল্লা:
বাংলার মিষ্টির কথা উঠলেই প্রথমেই আসে কলকাতার রসগোল্লার নাম। এই রসগোল্লায় হল বাঙালির কাছে মিষ্টির রাজা। ১৯৮৬ সালে প্রথম বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস নরম তুলতুলে এই রসগোল্লা তৈরি করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন।
বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা:
বর্ধমানের সীতাভোগ আর মিহিদানা বাংলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। এটা অনেকটা বাসমতি চালের ভাতের মতো দেখতে হয়।
শক্তি গড়ের ল্যাংচা:
এই ল্যাংচা এক ধরনের ভাজা মিষ্টি। যা রসে চুবানো হয় এর রং হয় কালচে বাদামি রঙের। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচা বাঙালির অতিপ্রিয়।
জয়নগরের মোয়া:
কনকচুর ধানের খই, খেজুর গুড়, আর গাওয়া ঘি দিয়ে তৈরি এই অতি জনপ্রিয় মিষ্টিটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর শহরের।
কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া ও সরভাজা:
সরভাজা কৃষ্ণনগরের একটি বিখ্যাত মিষ্টি। দুধের সরও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টির সুনাম বহুদিনের। সরপুরিয়াও বাংলার অত্যন্ত বিখ্যাত একটি মিষ্টি।
নবদ্বীপ দ্বীপের লাল দই:
নবদ্বীপের দই বাংলার আরও একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। যার উৎপত্তি নদিয়া জেলায়।
মালদার রস কদম:
মালদার রস কদম বাংলার অত্যন্ত বিখ্যাত একটি মিষ্টি। এর ভিতরে থাকে ছোট্ট ছানার রসগোল্লা আর তার ওপর থাকে ক্ষীরের পুরু স্তর। আর তার ওপরে দেওয়া থাকে চিনি মাখানো পোস্ত দানা।
সিউড়ির মোড়ব্বা:
বীরভূমের মোড়ব্বা হলো খুব ঘন চিনির রসে ডোবানো একটি সাধারণ সবজি। মোড়ব্বা সাধারণত পেঁপে,কুমড়ো কিংবা পটলের হয়ে থাকে।
বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ বা ম্যাচা:
বাঁকুড়া জেলার একটি জনপ্রিয় মিষ্টি,একে অনেক সময় ম্যাচা সন্দেশও বলা হয়ে থাকে। এই সন্দেশ মুগ ডাল ও চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়।
জনাইয়ের মনোহরা:
মনোহরা অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মিষ্টি। হুগলি জেলার জনাইয়ের ও মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙার মনোহরা অত্যন্ত প্রসিদ্ধ।
কাঁথির কাজু বরফি:
এটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মিষ্টি। বলা হয় কাঁথির কাজু বরফির স্বাদই আলাদা।
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের বড়সড় উদ্যোগ, কলকাতায় তৈরি হচ্ছে আরেকটি শপিং মল, কি কি পাবেন জানেন?
ক্ষীরপাইয়ের বাবরসা:
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাইয়ের বাবরসা অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মিষ্টি। ময়দা,দুধ,ঘি দিয়ে তৈরি হয় এই মিষ্টি।
গঙ্গারামপুরের ক্ষীর দই:
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের অত্যন্ত প্রসিদ্ধ মিষ্টি হল ক্ষীর দই। যা মুখে দিলেই মিলিয়ে যায় নিমেষে .
রামপুরহাটের রসমালাই:
বাঙালির অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টিটি ছোট ছোট আকারের রসগোল্লাকে চিনির রসে ভিজিয়ে তা জাল দিয়ে ঘন মিষ্টি দুধ ঢেলে বানানো হয়।
রানাঘাটের পান্তুয়া:
ছানা দিয়ে তৈরি এই পান্তুয়া পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটের বিখ্যাত মিষ্টি। মূলত ছানা, দুধ এবং ঘি-ই হল এর প্রধান উপকরণ।
বেলাকোবার চমচম:
জলপাইগুড়ির বেলাকোবার চমচম অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মিষ্টি। এর প্রধান উপাদান ছানা,ময়দা, চিনির রস আর খোয়া ক্ষীর।
চন্দননগরের জল ভরা সন্দেশ:
তালশাঁস আকৃতির জল ভরা সন্দেশ কড়া পাকের একটি বিশেষ সন্দেশ। এই সন্দেশ টি আবিষ্কার করেছিলেন চন্দননগরের সূর্য কুমার মোদক।
কাটোয়ার ছানার জিলাপি:
পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের ছানা তৈরি জিলিপি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
মাদিরাহাটের কমলাভোগ:
রসগোল্লা থেকে থেকে আকারে সামান্য বড় কমলা ভোগের এই মিষ্টিতে কমলা লেবু ব্যবহার করা হয়। যাতে সত্যিকারের কমলালেবুর স্বাদ পাওয়া যায়।