পার্থ মান্নাঃ ট্রেনে করে যাওয়ার পথে একাধিক স্টেশন আসে। কিছু স্টেশনের নাম খুব চেনা হলেও কিছু স্টেশনের নাম এমন থাকে যেগুলো অনেকটাই বিদঘুটে রকমের লাগে। পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের এমনই এক স্টেশন হলো ‘নোয়াদার ঢাল’। যদিও ঢাল নিয়ে এই একটা স্টেশনের নাম নয়, ঝাপটের ডাল, পিচকুড়ির ঢাল ইত্যাদি একাধিক স্টেশন রয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই কিভাবে এমন অদ্ভুত নামকরণ হলো স্টেশন গুলির তা নিয়ে মানুষের মনে জিজ্ঞাসা রয়েছে। তাই আজকের প্রতিবেদনে এমন অদ্ভুত নামকরণের কারণ বা বলা ভালো ইতিহাস সম্পর্কে জানাবো আপনাদের।
‘নোয়াদার ঢাল’ স্টেশনের ইতিহাস!
সালটা ১৮৫৩, ব্রিটিশ সরকার ভারতের রেলপথ চালু করেছিল বোম্বাইয়ে। তারপর হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত রেল চালু হলে সেটাকে বিস্তৃত করে রাণীগঞ্জ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়। এরপর রেলপথ সাহেবগঞ্জ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী বর্ধমান থেকে সাহেবগঞ্জ এর মধ্যে অনেকগুলো স্টেশন বা প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়। ১৮৬০ নাগাদ স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ হলে রেললাইন বসানোর কাজও প্রায় শেষের দিকে চলে আসে।
কিভাবে হয় নামকরণ?
এবার আসি স্টেশনগুলোর নামকরণের গল্পে। গুশকরা, বনপাস, পিচকুড়ির ঢাল, বোলপুর, ভেদিয়া, ঝাপটের ঢাল, রামপুরহাট এর মত একাধিক স্টেশনে নামকরণ হয়। তবে একটা স্টেশনের নাম বাকি রয়ে গিয়েছিল। তাই স্টেশনের এক ভারতীয় কর্মচারী রেলের ইংরেজ সাহেবের কাছে গিয়ে বলেন, স্টেশন তো হলো সাহেব কিন্তু স্টেশনের যে একটা নাম দিতে হয়। কি নাম হবে স্টেশনের? এই প্রশ্নের উত্তর এই লুকিয়ে গল্পটা।
যে স্টেশনটির নামকরণ বাকি ছিল তার আগের ও পরের স্টেশনের নাম ছিল পিচকুড়ির ঢাল ও ঝাপটের ঢাল। তাই নতুন করে ‘ঢাল’ শব্দ দিয়ে নামকরণ করতে চাইছিলেন না ইংরেজ সাহেব। তাই বেশি কিছু না ভেবেই কর্মচারীকে বলেন, put anything but “no other dhal” । শুরুতে এমন একখানা নাম শুনে বেশ চমকে গিয়েছিলেন ওই কর্মচারী। এর কিছুদিন পর দেখা যায় স্টেশনের নামের জায়গায় জ্বলজ্বল করে লেখা রয়েছে নোয়াদার ঢাল। এভাবেই নামকরণ হয়েছিল স্টেশনটির।
অর্থাৎ ‘No Other Dhal’ টাকেই ভুলকরে ‘নোয়াদার ঢাল’ শুনে ফেলে ওই কর্মচারী। আর সেই থেকেই নাকি স্টেশনের নামকরণ হয় নোয়াদার ঢাল।
*বিঃ দ্রঃ এই কাহিনীটা সত্যতা যাচাই করেনি Newzshort