চপ্পল,ইতিহাস,হাওয়াই চপ্পল,ভারত,Flip Flop,History,Hawai Flip Flop,India

Moumita

‘হাওয়াই চপ্পল’ তো সবাই ব্যবহার করেছেন, কিন্তু এর নেপথ্য ইতিহাস জানেন কি?

‘হাওয়াই চপ্পল’ জিনিসটা আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার পর কোনো মানুষই আর জুতো পরে থাকেনা। তখন তাদের একমাত্র সঙ্গী হয় হাওয়াই চপ্পল। কিন্তু কখনও মনে প্রশ্ন জেগেছে কি যে কেন এরকম অদ্ভুত নাম? কী এর ইতিহাস? বলে রাখি এই চপ্পল কিন্তু বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত।

   

অনেকেই মনে করেন প্লেনের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে হাওয়াই চপ্পল, কিন্তু এটা ভুল। যদিও এর স্ট্রিপগুলির আকৃতি V এবং Y এর মতো এবং যা দেখতে একটি বিমানের আকৃতির মতো। এর পেছনে আরো অনেক গল্প আছে। কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে আমেরিকার হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জের কারণে এই নামটি এসেছে কারণ আমেরিকার হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জে ‘টি’ নামের একটি গাছ রয়েছে। আর এই গাছের তৈরি রাবারের মতো কাপড়, সেই থেকে তৈরি এই চপ্পল। এই কারণেই নাকি এটি ‘হাওয়াই চপ্পল’ নামে পরিচিত।

আবার কেউ কেউ হাওয়াই চপ্পলের ওজন প্রসঙ্গ টেনে বলেন যে, এই চপ্পলের ওজন বাতাসের মতো হালকা, তাই একে ‘হাওয়াই চপ্পল’ বলা হয়। আবার জাপানিদের ইতিহাস দেখলে জাপানের বহুল প্রচলিত জুতো ‘জোরি’ এবং ‘গেটা’র সাথে আমাদের হাওয়াই চপ্পলের সাদৃশ্য রয়েছে। কেউ কেউ এটাও বিশ্বাস করেন যে ১৮৮০ সালে যখন জাপানের গ্রামীণ এলাকা থেকে শ্রমিকদের আমেরিকার ‘হাওয়াই দ্বীপে’ নিয়ে আসা হয়েছিল তখন চপ্পলের এই নকশাটিও তাদের সাথে ‘হাওয়াই’ দ্বীপে পৌঁছে যায়।

এদিকে ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধ’ এবং ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ’-র সময় আমেরিকান সৈন্যরা ব্যাপকভাবে চপ্পল ব্যবহার করেছিল। যদিও কিছু ইতিহাসবিদের বক্তব্য যে আমেরিকান সৈন্যরা জাপান থেকে ‘জোরি’ নিয়ে এসেছিল, যা পরবর্তীতে সর্বত্র বিখ্যাত হয়ে যায়। তবে ‘হাওয়াই চপ্পল’ নামকরণের জন্য যদি কাউকে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া হয় তাহলে তার হলো ব্রাজিলিয়ান ব্র্যান্ড হাওয়াইয়ানকে।

এই জুতা-ব্র্যান্ডটি ফ্লিপ-ফ্লপ স্লিপার তৈরি করে। ‘হাওয়াইনা’স’ কোম্পানি ১৯৬২ সালে কর্মজীবীদের জন্য রাবারের ফ্লিপ-ফ্লপ স্লিপার চালু করেছিল। এটি ছিলো সাদার উপর একটি নীল স্ট্রাইপযুক্ত স্যান্ডেল। কথিত আছে যে ‘হাওয়াইনাজ’-এর কারণেই এই চপ্পলগুলিকে ভারত এবং বিশ্বের বেশকিছু দেশে ‘হাওয়াই চপ্পল’ বলা হয়।