নিউজ শর্ট ডেস্ক: ভারতীয়দের কাছে রেল হল হল লাইফ লাইন। তাই ট্রেনের ওপরেই নির্ভরশীল আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ যাত্রী। তবে শুধু দেশের নয় বিদেশের পর্যটকদের কাছেও ভারতীয় রেল (Indian Railways) অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি গণ পরিবহন মাধ্যম।
তবে অনেকেই হয়তো জানেন না আমাদের দেশে এমন কিছু সুন্দর রেলস্টেশন আছে যা হামেশাই টেক্কা দিতে পারে ঝাঁচকচকে বিমানবন্দর গুলিকেও। শুধু তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দিক দিয়েই এই রেলস্টেশন গুলির সত্যিই কোনো তুলনা হয়ে না।
দুধসাগর রেল স্টেশন
মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ঘেরা আমাদের দেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি রেল স্টেশন হল দুধ সাগর রেল স্টেশন। এই রেলস্টেশনের ডান পাশে দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে দুধের মতো সাদা একটি জলপ্রপাত। এই জলপ্রপাতের মধ্য দিয়ে ট্রেন ছুটে চলার দৃশ্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
কেউ যদি এই জলপ্রপাতের সামনে দিয়ে একবার ট্রেনে সফর করেন তাহলে সেই দৃশ্য তিনি জীবনে কোনোদিন ভুলতে পারবেন না। দুধ সাগরে পৌঁছানোর আগে ট্রেনের দুপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দেয়। তবে দুধসাগর দেখার সেরা সময় কিন্তু বর্ষাকাল। এই সময় ট্রেনের চারপাশ একেবারে সবুজে ঘেরা রূপের ডালি নিয়ে হাজির হয়।
চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলস্টেশন
এই রেল স্টেশনকে দক্ষিণ ভারতের গেটওয়ে বলা হয়। এটি দক্ষিণ ভারতের ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন। তাই দক্ষিণ ভারতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলস্টেশন। জানলে অবাক হবেন এই রেল স্টেশনের বয়স ১৪৩ বছর। তাই বোঝাই যাচ্ছে স্টেশনটি বহু বছরের পুরনো। তবে পুরোনো হলেও কিন্তু আজও এই স্ট্রেশনের সৌন্দর্য ম্লান হয়নি একফোঁটাও। অনেকের কাছে এই স্টেশনটি হেনরি আরউইন নামেও পরিচিত।
কুনুর রেলওয়ে স্টেশন
এটি এমন একটি রেলওয়ে স্টেশন যা শহরটিকে গোটা দেশের সাথে সংযুক্ত করে। দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি পর্বতমালা স্টেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা একটি ঐতিহ্যবাহী রেল নেটওয়ার্ক হিসাবে পরিচিত । কুনুর এমন সুন্দর একটি রেল স্টেশন যা অনেক শহরের মধ্য দিয়ে গিয়েছে।
তিরুবনন্তপুরম রেলওয়ে স্টেশন
ভারতের ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম হল তিরুবনন্তপুরম। যা কেরালার বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সুন্দর রেলওয়ে স্টেশন। ঝাঁচকচকে এই রেলস্টেশনের বিলাসিতা কিন্তু কোনো বিমানবন্দরের চেয়ে কম নয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই ১৯৩১ সালে এই স্টেশনটি নির্মিত হয়েছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত কেরালা সরকারই এই স্টেশনের দেখভাল করছে।
চারবাগ স্টেশন
দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই রেলস্টেশনের তালিকায় নাম রয়েছে লখনউয়ের চারবাগ রেলওয়ে স্টেশনেরও।ব্রিটিশ আমলে তৈরী এই বিশাল ভবন বাইরে থেকে দেখতে ছোট হলেও এর ভিতরের সৌন্দর্য্য এককথায় অসাধারণ। এই রেলস্টেশনের স্থাপত্যে মুঘল ও রাজপুত আমলের নিদর্শনও পাওয়া যায়। উপর থেকে এই রেলস্টেশন দেখতে দাবার বোর্ডেরমতো। এই স্টেশনের লম্বা স্তম্ভ এবং নীচের গম্বুজগুলি দাবা খেলোয়াড়দের মতো দেখতে।
ঘুম রেলওয়ে স্টেশন
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত এই ঘুম স্টেশন ভারতের তো বটেই গোটা বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলওয়ে স্টেশন। এই স্টেশনটি দার্জিলিং থেকে মোট ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অত্যন্ত পুরানো এই রেল স্টেশনটি তৈরী হয়েছিল ১৯২৮ সালে।এখানে প্রতিদিন টয় ট্রেন চলে। এটি ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
কানপুর রেলওয়ে স্টেশন
ভারতের সবচেয়ে বড় এবং ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন হল কানপুর। এটি ভারতের চারটি কেন্দ্রীয় রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে একটি। বয়সের দিক থেকেও অত্যন্ত পুরানো এই রেলওয়ে স্টেশনটি নির্মিত হয়েছিল ১৯২৮ সালে। এই রেলওয়ে স্টেশনের সাথে বিরাট মিল রয়েছে লখনউয়ের চারবাগ রেলওয়ে স্টেশনের।
কটক রেলওয়ে স্টেশন
ওড়িশার কটক রেলওয়ে স্টেশন সবার থেকে একেবারে আলাদা। অনেকেই হয়তো জানেন না এই রেলস্টেশনটি বরাবতী দুর্গের অনুকরণে তৈরী করা হয়েছে। এই দুর্গটি ১৪ শতকে গঙ্গা রাজবংশ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সেই থেকে আজও এই দুর্গ ওড়িশার গর্ব।