নিউজশর্ট ডেস্কঃ বাঙালি তথা হিন্দুদের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান হলো পুরী(Puri)। পুরীর জগন্নাথ মন্দির(Jagannath Temple) আজও সকল হিন্দুর কাছে এক দর্শনীয় স্থান। এই মন্দিরের পবিত্রতা ও কাহিনী সত্যি অবিশ্বাস্য। তাইতো প্রতিবছর দেশের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম ঘটে এই পূণ্যভূমিতে। শুধু সমুদ্র সৈকতই নয়, পুরীর এই জগন্নাথ মন্দিরও পুরীতে লোক সমাগমের অন্যতম কারণ। তবে সময় ও মাস বিশেষে পুরীর মন্দিরের নিয়ম-নীতিতে নানান পরিবর্তন হয়।
আর এই কার্তিক মাস হলো শ্রী জগন্নাথ মন্দির অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে অত্যন্ত পবিত্র এক মাস। এই সময় এখানে বিশেষ রীতি মেনে পুজো করা হয়। ইতিমধ্যেই জগন্নাথ ধামের সেবায়তরা এই বিষয়ে সেরে ফেলেছেন একদফা বৈঠক। আসলে গোটা কার্তিক মাসকেই পবিত্র মাস হিসাবে মানেন ওড়িয়ারা। নানান আচার-নিয়ম মানা হয় এই সময়। সেই কারনেই এই সময় দূর থেকে আগত পুন্যার্থীদের যেন কোনো সমস্যা না হয়। যেন এই পবিত্র তীর্থস্থানে তারা নির্বিঘ্নে জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রার দর্শন করতে পারে সেটাই সুনিশ্চিত করেই মন্দির কর্তৃপক্ষের আসল উদ্দেশ্য।
জগন্নাথ দেবের দর্শনের সাথে সাথে এখানে ভক্তরা আসেন আরেকটি কারনেও। সেটি হল মন্দিরের মহাপ্রসাদ অর্থাৎ “বলভোগ” লাভ করার জন্য। তবে এই মহাপ্রসাদ এর তৈরীর স্থান “রস ঘরা” অর্থাৎ মন্দিরের রান্নাঘরে সকলের প্রবেশের অনুমতি থাকে না। তাই এই প্রতিবেদনে জেনে নিন এই মাসের নতুন নিয়ম সম্পর্কে। এই পুণ্য মাসে দেবতার দর্শন ও ভোগ নিবেদনে আসতে চলেছে একাধিক পরিবর্তন। ইংরেজি মাসের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জগন্নাথধামে চলে বিশেষ ‘দ্বারা পিঠা নীতি’।
এইসময় ভোর ৪টে নাগাদ তৈরি হবে জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ। এই প্রতিটি জিনিসের পেছনে রয়েছে আলাদা আলাদা কারণ। তাই এগুলি সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে সমস্যায় পড়তে পারেন আপনি। এছাড়াও এই মাসের ২৮ তারিখে রয়েছে ‘রাহুগ্রস্ত খণ্ডগ্রস’ কিংবা ‘চন্দ্রগ্রহণ’। ওদিন ভোর সাড়ে ৪টে থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে জগন্নাথদেবের ‘রাধা রমন বেশ’। অর্থাৎ ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং দেবী সুভদ্রাকে ভক্তিভরে সাজিয়ে তোলা হবে স্বর্গীয় ভাবে।
শুধু এটুকুই নয়। পুণ্য মাস কার্তিকে রয়েছে আরও নানান নিয়ম। যেমন এই মাসে বেলা ২টো নাগাদ ‘গহন মহাসন’ অর্থাৎ জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তিকে সুসজ্জিত করা হবে গয়না দ্বারা। এরপর বিকেল ৪টে বেজে ৪ মিনিটে শুরু হবে ‘পাকা ত্যাগ’ এবং ‘দেব নীতি নীশিধা’। বিশেষ এই সময় দর্শনার্থীদের জন্যেও রয়েছে বিশেষ নিয়ম। এই সময় চাইলেই যা খুশি পোশাক পরে আপনি প্রবেশ করতে পারবেন না মন্দিরে। আপনার পোশাকের ওপর কঠোর নজর রাখবে মন্দির কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে বিশেষ ড্রেস কোড আগামী জানুয়ারিতে প্রকাশ করা হলেও এই কার্তিক মাসেও মানতে হবে এই নিয়ম।