নিউজশর্ট ডেস্কঃ আমাদের দেশে আদর্শবান লোকের অভাব নেই, যারা কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের লক্ষ্য অর্জন করে। এমতাবস্থায় একজন রিকশাচালকের মেয়ের স্বর্ণপদক(Gold Medalist) জিতে আনা অনেক বড় অর্জন। সম্প্রতি এমনই এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্তের সাক্ষ্মী হয়ে রইল উত্তরপ্রদেশের(Uttarpradesh) মিরাট শহর।
এই গল্প উত্তরপ্রদেশের মিরাট শহরের এক রিকশাচালক ইউনুন খানের মেয়ে শামা পারভীনের(Shama Parveen) গল্প। যিনি তার কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার জোরে স্বর্ণপদক জিতেছেন। আর এই সাফল্য শামার জন্য একটু বেশিই কঠিন। কারণ শামা একচোখে অন্ধ। তাহলে জেনে নিই শামার কাহিনী।
পরিবারের আর্থিক অবস্থা যে ভালো নয় তা তো বলাই বাহুল্য। শামার যখন এক বছর বয়স তখনই একটি চোখের জ্যোতি কমতে থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে কমতে কমতে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকে শামার দৃষ্টিশক্তি। কিন্তু এতকিছুর পরেও পড়াশোনা থামাননি তিনি।
এরপর দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ হওয়ার পর চরণ সিং বিশ্ববিদ্যালয়, মিরাটে বিএসসি ম্যাথে ভর্তি হন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি শ্যামা। বিএসসিতে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, গোটা জেলার মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে সে। আর এই কারণে কলেজ থেকে স্বর্ণপদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে তাকে।
প্রসঙ্গত, শামা পারভীন তার ভাইবোনের মধ্যে বড়, তাই পরিবারের দায়িত্ব তার কাঁধে। এক চোখে দেখতে না পারার কারণে শামাকে প্রায়ই প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের কটূক্তি শুনতে হতো, কিন্তু শামা সবার কথা উপেক্ষা করে শুধু নিজের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেন এবং আজ সফলতা অর্জন করেছেন।
শামা পারভীন তার বাবা ইউনুন খানকে তার আদর্শ বলে মনে করেন, যার কঠোর পরিশ্রম এবং উৎসাহে তিনি এই অবস্থান অর্জন করেছেন। অন্যদিকে, শামা স্বর্ণপদক জেতার পর, তার বাবা ইউনুন খানও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। যিনি একদিন বাড়ির জিনিসপত্র বন্ধক রেখে শামার কলেজের ফি পরিশোধ করেছিলেন আজ সেই মেয়ের সাফল্য দেখে গর্বে ভরে উঠেছে তার বুক।