কলকাতা শহরের নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্দেশ্যে, পুজোর আগে একের পর এক নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতা পুলিশ। আরজি কর কাণ্ডের পর বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে মনোজ বর্মা কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে বড় পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরই মাঝে, মহালয়ার আগের রাতে মাত্র পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করল কলকাতা পুলিশ।
সাইবার কাফে ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
প্রথম নির্দেশিকা জারি করা হয় সন্ধ্যা পৌনে ছ’টায়, যেখানে সাইবার কাফে সংক্রান্ত কঠোর নিয়মাবলী ঘোষণা করা হয়। কলকাতা পুলিশের মতে, সাইবার কাফেগুলিতে সাধারণ মানুষের যাতায়াত বেশি, যা দুষ্কৃতিকারীদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে। এর ফলে, সাইবার কাফেগুলিতে সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না আর রেজিস্ট্রারে বিস্তারিত তথ্য জমা রাখতে হবে। এ ছাড়া, কম্পিউটারের সার্ভারের সমস্ত তথ্য ছয় মাসের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
পরিবেশ রক্ষার পদক্ষেপ
এরপর পরিবেশ দূষণ রোধে দ্বিতীয় নির্দেশিকা জারি করা হয় সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে। শহরের বায়ু দূষণ ও পরিবেশ রক্ষার্থে সব ধরনের বর্জ্য পোড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কলকাতা পুলিশ। পুজোর সময় পরিবেশ দূষণের সমস্যা বিশেষ করে বৃদ্ধি পায়, তাই এই পদক্ষেপকে সময়োপযোগী বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
বাড়ি ভাড়া এবং ভাড়াটে সম্পর্কিত নির্দেশিকা
রাত ৯টা ৩২ মিনিটে তৃতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, বাড়ি ভাড়া বা পেয়িং গেস্ট সংক্রান্ত তথ্য স্থানীয় থানায় জমা দিতে হবে। পুলিশের মতে, অনেক সময় ভাড়াটের আড়ালে দুষ্কৃতী বা জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকতে পারে, যা নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হতে পারে। তাই বাড়িওয়ালারা ভাড়াটের সব ধরনের তথ্য থানায় জানাতে বাধ্য থাকবেন।
জমায়েত নিষেধাজ্ঞা
রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে জারি করা চতুর্থ নির্দেশিকায়, শহরের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় এক সঙ্গে পাঁচ জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে। বিশেষ কিছু এলাকায়, যেখানে মিছিল ও সমাবেশের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে শান্তি বজায় রাখতে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রেস ক্লাব চত্বর, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, এবং লালবাজার চত্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
কলকাতা পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ: সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
কলকাতা পুলিশের এই নির্দেশিকাগুলি মূলত পুজোর সময়কালীন নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যেই। অপরাধীদের ঠেকাতে ও সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশের নির্দেশ ভঙ্গ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।