নিউজশর্ট ডেস্কঃ ভারতীয় সুপ্রাচীন রীতিনীতির অনেক নিদর্শনই ধ্বংস হয়ে গেছে সময়ের সাথে সাথে। আবার কখনো বাইরে থেকে আসা হানাদারদের আক্রমণে শেষ হয়ে গিয়েছে এক প্রাচীন সভ্যতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। কিন্তু ভারতের মন্দিরগুলি সেই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। তেমনই এক মন্দির হলো মাতঙ্গেশ্বর মন্দির(Matangeswar Temple)।
এখানকার আরাধ্য শিবলিঙ্গকে(Shivlinga) মানুষ এতোটাই জাগ্রত মানে যে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে এখানে। জানা যায় এটিই পৃথিবীর একমাত্র শিবলিঙ্গ যা দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। এইমুহুর্তে এই শিবলিঙ্গটির উচ্চতা প্রায় ৯ ফুটেরও বেশি। দেশ বিদেশ থেকে লোক ছুটে আসে এই শিব লিঙ্গের দর্শন করতে। মন্দিরের পূজারিদের কথা অনুযায়ী, শিব লিঙ্গটির উচ্চতা প্রতি বছর প্রায় ১ ইঞ্চি করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানকার স্থানীয় মানুষদেরও একই দাবি। রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গেছে যে, এই শিব লিঙ্গটি যতটা মাটির উপরে আছে ততটাই মাটির নিচে আছে। এর সাথে জড়িয়ে আছে অনেক রহস্য। লোকমুখে শোনা যায়, এটি বাড়তে বাড়তে যেদিন পাতাল প্রবেশ করবে সেদিন পৃথিবীর সম্পূর্ণ অবসান ঘটবে।
শিবলিঙ্গের গল্প শুধু তাই নয়, শাস্ত্রেও বলা রয়েছে এই মন্দিরের বিশেষত্ব। শাস্ত্র অনুসারে ভগবান শিব যুধিষ্ঠিরের হাতে একটি অলৌকিক রত্ন তুলে দিয়েছিলেন। যা যুধিষ্ঠির মাতঙ্গ ঋষিকে দিয়েছিলেন। কোনোভাবে এই রত্ন রাজা হর্ষবর্মণের কাছে এলে রাজা এই রত্নটিকে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন। বলা হয় এই রত্নটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলার পর এর আকার বাড়তে থাকে এবং এটি শিবলিঙ্গের রূপ নেয়। আসলে মাতঙ্গেশ্বর মন্দিরে অবস্থিত এই শিবলিঙ্গটি একটি রত্ন দিয়ে তৈরি।
মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুরের খাজুরাহোতে অবস্থিত মাতঙ্গেশ্বর মন্দিরটি চান্দেল রাজবংশের রাজারা তৈরি করেছিলেন। নবম শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দিরটি প্রায় ৩৫ ফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এর গর্ভগৃহটিও অত্যন্ত মনোরম। বিজ্ঞানীরাও কিছু পাননি কীভাবে বাড়ছে এই শিবলিঙ্গের আকার? এ নিয়ে অনেক ধরনের গবেষণাও হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো হদিসই বিজ্ঞানীরা পাননি।
কখন দর্শন করতে পারবেন মাতঙ্গেশ্বর মন্দির দেখার সেরা সময় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি। এ সময় সারা বিশ্বের মানুষ এই মন্দিরে আসেন এবং ভগবানের দর্শন করেন। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকেই খাজুরাহো আসার বিমান বন্দর এবং রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে।