নিউজশর্ট ডেস্কঃ শীতকালে এদিক-সেদিক ঘুরতে(Travel) যাওয়ার জন্য পর্যটকদের মন আনচান করতে থাকে। অল্প কয়েকদিনের সময় পেলে কেউ যেমন ‘দিপুদা’ বেরিয়ে আসেন। ঠিক তেমনি কেউ আবার অফবিট লোকেশনের(Offbeat Location) খোঁজ করেন। তবে এগুলো ছাড়াও উইকেন্ডের ছুটিতেও অনেকে কোথাও ঘুরতে যেতে চান। আপনিও কি উইকেন্ডের ছুটিতে রাজকীয়ভাবে থাকতে চাইছেন? ধরুন কোন জমিদার বাড়িতে থাকার সুযোগ পেলেন।
তাহলে নিশ্চয়ই আপনার মন আরো বেশি ভালো হয়ে যাবে। চলুন আজকের এই প্রতিবেদনে একটি জমিদারি বাড়ির খোজ দিচ্ছি। যেখানে আপনি উইকেন্ডে গিয়ে দারুণভাবে সময় কাটাতে পারবেন। কলকাতা থেকে মাত্র ৪ ঘন্টা দূরত্বই রয়েছে বাড়ি কোঠি(Bari Kothi)। পূর্ব ভারতের প্রথম বিলাসবহুল ও ঐতিহ্যবাহী হোটেল এই বাড়ি কোঠি।। মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জের হেরিটেজ হোটেল এই বাড়ি কোঠি। এখানকার সৌন্দর্য দেখলে আপনি ভুলে যাবেন রাজবাড়ীর সৌন্দর্যকে। চলুন তাহলে এই বাড়ির ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১৭০০ সালে শেরাওয়ালী পরিবার এই বাড়ি কোঠি তৈরি করেছিলেন। রাজস্থান থেকে এক ব্যবসায়ী পরিবার মুর্শিদাবাদে এসেছিল আর মুর্শিদাবাদে থাকতে থাকতে তারা এখানে জমিদারি স্থাপন করে. সে সময়ে প্রায় কুড়ি থেকে ত্রিশটা শেরাওয়ালী পরিবার এই বাড়ি কোঠিতে থাকতো। সে সময় তাদের যা সম্পত্তি ছিল তা ব্রিটিশদের থেকেও বহুগুণ বেশি। তবে এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শেরাওয়ালী পরিবারের লোকজনেরা আজিমগঞ্জ ছাড়তে থাকে।
আর এর ফলে এই বাড়ির সৌন্দর্য স্থাপত্য ও সমস্ত কিছুই ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় এই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে কানাডা স্থাপত্যশিল্পী সমর চন্দ্র এই বাড়ি কোঠির সৌন্দর্য আবার পুনরুত্থান করেন। এই বাড়ি তখন হয়ে ওঠে পূর্ব ভারতের প্রথম হেরিটেজ হোটেল। একেবারেই গঙ্গার পাড়ে এই হোটেল গড়ে উঠেছে। এখানে এলে মনে হবে আপনি পুরনো দিনের সময়ে ফিরে এসেছেন।
আগেকার দিনের বড় বড় পালঙ্ক, আলনা, ড্রেসিং টেবিল সমস্ত কিছুই দেখতে পাবেন এই ঘরগুলোতে। খুব সুন্দরভাবে সাজানো ১৫ টি সুইট রয়েছে। এখানে খাবার ঘর রয়েছে যেগুলোর নাম হল জারিনমহল, দরবার হল আর নৌবত খানা। এখানে বাড়ির ভেতরে পেয়ে যাবেন নাট মন্দির যেখানে আজকেও ধুমধাম করে দুর্গাপূজা হয়। এছাড়া এখানে রয়েছে একটি বিরাট উঠোন। এখানের বাগান ঘুরতে ঘুরতেই আপনি একেবারে গঙ্গার পাড়ে পৌঁছে যেতে পারবেন। এই গঙ্গাতে আপনি নৌকা বিহারেও করতে পারেন।
আপনি এখানে এসে একটা গোটা দিন পুরো কাটাতে পারেন। এখানে পুরোটাই প্যাকেজ হিসেবে খরচ পড়বে। লাঞ্চ থেকে পরের দিন ব্রেকফাস্ট পর্যন্ত সবই প্যাকেজের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে এক রাতে খরচ খাওয়া-দাওয়া সমস্ত মিলিয়ে প্রায় ১৪ থেকে ২১ হাজার টাকার মত। আর আপনি যদি ডে ট্রিপ করতে চান খালি বাড়ির কোঠি ঘুরে দেখার জন্য সেক্ষেত্রেও আপনার লাঞ্চের সুবিধা রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ২৫০০ টাকা থেকে ৫৫০০ টাকার মত। তবে এখানে আমিষ খাবার মিলবে না। সমস্ত কিছুই মাড়োয়ারি খাবার পরিবেশন করা হয়। তাহলে উইকেন্ডে বেড়িয়ে পড়ুন বাড়ি কোঠির উদ্দেশ্যে।