দুর্গাপূজা হল বাঙালির হৃদয়ের উৎসব। বছরের এই চারটে দিনে প্রাণ খুলে আনন্দে মাতে ছোট বড় সকলেই। প্রতি বছর মহালয়ার দিন আমরা মা দুর্গার আগমন বার্তা পাই, কিন্তু বর্ধমানের আসানসোলের ধেনুয়া গ্রামের কালীকৃষ্ণ যোগাশ্রমে মহালয়াতেই মা দুর্গার পুজো শুরু হয় এবং শেষ হয় একদিনেই। দুর্গাপূজার এই বিশেষ রীতি ইতিমধ্যেই বহু দর্শনার্থীর মনোযোগ কেড়েছে।
একদিনের পুজোর ঐতিহ্য
১৯৭৯ সালে তেজানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজের স্বপ্নাদেশে শুরু হওয়া এই পুজো আজও ঐতিহ্যের সঙ্গে পালিত হচ্ছে। কালীকৃষ্ণ যোগাশ্রমে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং দশমীর সমস্ত পুজো একদিনেই সম্পন্ন করা হয়। মহালয়ার সকালে বোধন দিয়ে শুরু হয় পুজোর আচার। তারপর নবপত্রিকা স্নান করিয়ে সপ্তমী পুজো আরম্ভ হয়। একচালার মা দুর্গার সঙ্গে এখানে থাকেন তাঁর দুই সখী – জয়া ও বিজয়া। গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী বা সরস্বতী এখানে পুজিত হন না।
এক দিনের দুর্গাপুজো দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়
এই বিশেষ একদিনের দুর্গাপূজা দেখতে ধেনুয়া গ্রামে দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। আসানসোলের বার্ণপুরে দামোদর নদীর তীরে অবস্থিত এই যোগাশ্রমে পুজো উপলক্ষে প্রতিটি মুহূর্তে ভক্তদের সমাগম হয়। বনেদি বাড়ির পুজো থেকে শুরু করে গ্রামবাংলার পুজো দেখতে যারা উৎসুক তাদের কাছে এই এক দিনের দুর্গাপূজা সত্যিই বেশ অন্যরকম। তাই এই পুজো দেখার জন্য ব্যাপক ভিড় হয়।
বিসর্জনের নিয়ম
পুজো শেষে, নবপত্রিকা বিসর্জন দেওয়া হয়, তবে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় দশমীর দিন। অন্য মণ্ডপের প্রতিমার সঙ্গে এই প্রতিমাটিকেও সেদিন দামোদর নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই বিশেষ প্রথা আসানসোল এবং বর্ধমান অঞ্চলের দুর্গাপূজা ২০২৪-এর অন্যতম আকর্ষণ হিসাবে কাজ করে। সেই কারণেই বিসর্জনের সময়েও ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত।
Durgapuja 2024 এবং বর্ধমানের বৈচিত্র্য
দুর্গাপূজা ২০২৪ উপলক্ষে বর্ধমান জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরনের পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু ধেনুয়া গ্রামের এই একদিনের পুজোর প্রথা আজও হাজারো মানুষের মনে আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে। মা দুর্গার এই অভিনব পুজো দর্শকদের মধ্যে এক অনন্য অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।