ভারতের পরিবেশ আন্দোলনের প্রখ্যাত নেতা সোনাম ওয়াংচুক ও অন্যান্য পরিবেশ কর্মীদের মুক্তির জন্য একটি পিটিশন দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে সিংহু সীমান্তে তাঁদের আটক করা হয়।লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাত্রা করে সোনাম ওয়াংচুক ও তাঁর সহযোগীরা লাদাখের জন্য ষষ্ঠ তফসিলের দাবি জানাচ্ছেন।
২০১৯ সালে, লাদাখকে ইউনিয়ন টেরিটরি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে এই সময়সূচির দাবিটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ষষ্ঠ তফসিলে উপজাতীয় এলাকাগুলির জন্য স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা প্রয়োগের জন্য সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা স্থানীয়দের অধিকার এবং পরিচয় রক্ষায় সাহায্য করে। বর্তমানে এটি কেবল অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের মতো উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যে প্রযোজ্য কিন্তু বাকি রাজ্যে নয়। সেই নিয়েই শুরু ঘটনার।
আন্দোলনের সূত্রপাত কিভাবে?
সোনাম ওয়াংচুক, যিনি লাদাখে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য একটি দীর্ঘদিনের আন্দোলন চালিয়ে আসছেন, তাঁর দাবিগুলির মধ্যেই রয়েছে লাদাখের পরিবেশ রক্ষা। গত মাসে, তিনি এবং অন্যান্য পরিবেশ কর্মীরা রাজধানীতে পায়ে হেঁটে যাওয়া শুরু করেন, যা মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকী, ২ অক্টোবর, রাজঘাটে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে, দিল্লি পুলিশ তাঁদের রাজধানীতে প্রবেশের আগে আটক করে। সোনাম ওয়াংচুকের মুক্তির জন্য এবং তাঁদের শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবিগুলি জানাতে দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি পাওয়ার জন্য আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে।
আদালতের প্রেক্ষাপট
তাদের গ্রেফতারিরি পর দিল্লি আদালতে একটি পিটিশন পেশ করা হয়েছে। আর এই পিটিশনটি প্রধান বিচারপতি মানমোহন এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চের সামনে উত্থাপন করা হয়েছিল, তবে জরুরি শুনানির জন্য তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “সোনাম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে প্রবীণ নাগরিকসহ ১৫০ জনের একটি দল পায়ে হেঁটে লেহ থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪। তাঁদের দাবি, পরিবেশ সুরক্ষা, লাদাখের ষষ্ঠ সময়সূচির মর্যাদা, রাজ্যত্ব এবং আরও গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব।” এছাড়া, পিটিশনে দিল্লি পুলিশের ৩০ সেপ্টেম্বরের সেই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, যেখানে পাঁচজনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সোনাম ওয়াংচুক এবং তাঁর সহযোগীদের মুক্তির জন্য আপাতত শুনানি ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। তাঁদের দাবি এবং আন্দোলন, বিশেষ করে লাদাখের স্বায়ত্তশাসনের জন্য, দেশের গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে। সকলেই আশা করেন, দিল্লি হাইকোর্টে বিষয়টি আলোচিত হলে পরিবেশ আন্দোলনের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ আসবে।